ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

আজিজুর ও মোস্তাফা জব্বার পেলেন ফজলুল হক স্মৃতি পুরস্কার

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২৭ অক্টোবর ২০১৬

আজিজুর ও মোস্তাফা জব্বার পেলেন ফজলুল হক স্মৃতি পুরস্কার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এবছর ‘ফজলুল হক স্মৃতি পুরস্কার’ পেলেন চলচ্চিত্র পরিচালনায় আজিজুর রহমান এবং চলচ্চিত্র সাংবাদিকতায় মোস্তফা জব্বার। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সাংবাদিকতার পথিকৃৎ, প্রথম চলচ্চিত্র বিষয়ক ‘সিনেমা’ পত্রিকা সম্পাদক ও চলচ্চিত্র পরিচালক ফজলুল হকের বুধবার ছিল ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। এই দিনটিতে তাকে স্মরণ করে ফজলুল হকের সহধর্মিণী প্রখ্যাত কথাশিল্পী রাবেয়া খাতুনের উদ্যোগে এই পুরস্কার দেয়া হয়। রাজধানীর একটি হোটেলে আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে পুরস্কৃতদের হাতে এর অর্থমূল্য ২৫ হাজার টাকা, সম্মাননাপত্র ও স্মারক তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। এ সময় ফজলুল হকের কন্যা কেকা ফেরদৌসী উপস্থিত ছিলেন। অসুস্থতাজনিত কারণে এবার অনুষ্ঠানে যোগ দেননি রাবেয়া খাতুন। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব সৈয়দ সালাহউদ্দীন জাকী। শহিদুল আলম সাচ্চু পরিচালিত ফজলুল হক স্মরণে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘সম্মুখযাত্রী ফজলুল হক’ প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ফজলুল হক স্মৃতি পুরস্কারের ১৩তম আসর। অনুষ্ঠানে আহমাদ মাযহার সম্পাদিত ‘ফজলুল হক : অগ্রগামী স্বাপ্নিক’ শিরোনামে একটি স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উšে§াচন করা হয়। পুরস্কার প্রদানের সময় অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, একজন কর্মনিষ্ঠ উদার মনের মানুষ ছিলেন ফজলুল হক। দেশের চলচ্চিত্র উন্নয়নের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে তিনি বৈচিত্র্যময় অগ্রপথিকের ভূমিকা পালন করেছেন। তার মধ্যে ছিল এক ধরনের ক্ষীপ্রতা। আর এই কারণে তিনি একের পর এক নতুন নতুন কাজে হাত দিতেন। এটাই ছিল তার বৈশিষ্ট্য। চলচ্চিত্র উন্নয়নের জন্য তিনি যে পথ তৈরি করে গেছেন তার দেখানো পথে অনেকেই এখন হাঁটছেন। ভবিষ্যতেও হাঁটবেন। ফারজানা ব্রাউনিয়ার সঞ্চালনায় পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি এক সময় রূপ নেয় স্মতিচারণ অনুষ্ঠানে। ফজলুল হককে কথামালায় স্মৃতিচারণ করেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার, মতিন রহমান, দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, চিš§য় মুৎসুদ্দী, আবদুর রহমান, রেজানুর রহমান, জহির উদ্দিন মাহমুদ মামুন, মুকিত মজুমদার বাবু, ছোট ছেলে ফরহাদুর রেজা প্রবালসহ আরও অনেকে। পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি ব্যক্ত করে চলচ্চিত্র পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, ফজলুল হক নামাঙ্কিত এই স্বীকৃতি আমাকে চলচ্চিত্র নির্মাণে আরও বেশি অনুপ্রাণিত করবে। মোস্তফা জব্বার বলেন, চলচ্চিত্রে যৎসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ফজলুল হকের মতো এক অগ্রপথিকের নামে প্রবর্তিত পুরস্কার পেয়ে সত্যিই আনন্দিত ও গর্ববোধ করছি। স্মৃতিচারণ করে অন্যান্য বক্তা বলেন, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলচ্চিত্র নির্মাণের কোন অবকাঠামোই যখন গড়ে ওঠেনি, সিনেমা করার কথা যখন ভাবাও যায়নি। সেই সময় তার উদ্যোগে প্রকাশিত হয়েছিল ‘সিনেমা’ নামে একটি পত্রিকা। এ কারণে আজও সবার কাছে মহীরুহ হয়ে আছেন ফজলুল হক। ভবিষ্যতেও দীপ্যমান হয়ে থাকবেন বাংলার মানুষের মনে। ফজলুল হক ছিলেন একজন স্বপ্নবাজ মানুষ। ছয় দশক আগে তিনি যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তার সেই স্বপ্নের পথ ধরে আজ বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সাংবাদিকতা তথা চলচ্চিত্র জগৎ এগিয়ে যাচ্ছে। ফজলুল হকের স্বপ্নকে তরুণ প্রজšে§র মাঝে ছড়িয়ে দেয়া ও তা এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য নতুন প্রজন্মের প্রতি তারা আহ্বান জানান। আরশীনগর ফাউন্ডেশনের বর্ষপূতি উৎসব অনুষ্ঠিত ॥ নান্দনিক আয়োজনে সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আরশীনগর ফাউন্ডেশনের ১৩তম বর্ষপূর্তি উৎসব হয় বুধবার সন্ধ্যায়। জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এই উৎসবকে ঘিরে বসেছিল নবীন ও প্রবীণ শিল্পীদের সমন্বয়ে বাংলা গানের আসর ‘গান চিরদিন’। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন কবি শাহীন রেজা, কথাশিল্পী উম্মে হাবিবা মুন্নী ও রোটারিয়ান আব্দুল বাছিত। সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোঃ মহিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, নতুন প্রজন্মের মাঝে বাংলা গানের চর্চা বাড়ানো উচিত। আমাদের হাজার বছরের গৌরবময় সংস্কৃতি নিয়ে আরশীনগর ফাউন্ডেশনের মতো অন্যান্য সংগঠনকেও নিরলস কাজ করে যেতে হবে, কারণ আমাদের সংস্কৃতিই আমাদের শক্তি। অপসংস্কৃতিরোধে প্রজন্মের মাঝে বাংলা গানের চর্চার কোন বিকল্প নেই। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব কণ্ঠশিল্পী পথিক সবুজের সংকলন ও সম্পাদনায় ‘গানের ডায়েরী’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন। এরপর তানজিনা ঋতু ও সোহানুর রহমান সোহেলের উপস্থাপনায় একে একে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী যারাহ্ সুবহা গল্প, পথিক সবুজ, রেজা তাবাস্সুম প্রমা, আলিশা হক বৃষ্টি, সাফিনা শারমীন, সাবিনা লাকী, শায়লা রহমান, মহিদুল ইসলাম, বজলুর রহমান, অরিণ ও খন্দকার মোকাররম আলী।
×