ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পশু ক্রয়ের প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ২৮ আগস্ট ২০১৬

পশু ক্রয়ের প্রস্তুতি

মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব ঈদ-উল-আযহার পক্ষকালেরও বেশি দেরি। তবু এরই মধ্যে কোরবানির পশু কেনা নিয়ে প্রস্তুতি-পরিকল্পনা শুরু হয়ে গেছে। মিডিয়াতেও তার পূর্বাভাস মিলছে। শুক্রবার একটি ইংরেজী দৈনিকের প্রথম পাতায় কেরানীগঞ্জের পশু খামারের একটি ছবি ছাপা হয়েছে। তাতে দশাসই এক মহিষের জেল্লা দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। পাশের খুঁটিতে ঝোলানো ফলক থেকে জানা যাচ্ছে খামারির কাছ থেকে চার লাখ টাকা দিয়ে পশুটি আগাম কিনেছেন স্বনামধন্য এক সাবেক ক্রিকেট খেলোয়াড়। ছবির ক্যাপশন থেকে পাঠকরা জানছেন ওই ক্রিকেটার প্রতিবছর অন্যান্য পশুর সঙ্গে একটি করে মহিষও কোরবানি দিয়ে থাকেন। রঙ্গরসে অভিনবত্বও যোগ হতে দেখা যায় আজকাল। এই যেমন সেদিন কোরবানির পশু সংক্রান্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কিছু পরিসংখ্যান। পত্রিকা জানাচ্ছে, দেশে এক বছরে গরু মোষ ছাগল ভেড়া মিলিয়ে গবাদি পশুর সংখ্যা ৫ লাখ ২০ হাজার বেড়েছে। দেখা যাচ্ছে দেশে প্রতিবছর কোরবানির গরুর চাহিদা তৈরি হয় সর্বোচ্চ ৪০ লাখের মতো। অভ্যন্তরীণ চাহিদার শতকরা প্রায় ৯০ শতাংশ নিজস্ব উৎপাদন থেকে আসছে। এবার কোরবানিযোগ্য গরু দেশে আছে ৪৪ লাখ ২০ হাজার; ছাগল ও ভেড়া রয়েছে ৭০ লাখ ৫০ হাজার। তাই ঘাটতি না হওয়ারই কথা। স্বস্তিকর বিষয় হলো, সরকার আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে গরুতেও দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খামারিদের গরু লালন-পালনে উৎসাহিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০০ কোটি টাকার একটি তহবিলও গঠন করেছে। কোরবানির পশু কিনতে যারা রাজধানীর হাটে যান তাদের ঝুলিতে বিচিত্র অভিজ্ঞতার সঞ্চয় বাড়ে, সন্দেহ নেই। এখন অবশ্য সবকিছুতেই প্রযুক্তির ছোঁয়া। সেই হাওয়া এসে লেগেছে কোরবানির পশুর হাটেও। এবারও অনলাইনে পশুর হাট বসছে! এই ভার্চুয়াল হাটে ক্রেতারা নিজেদের পছন্দ ও বাজেট অনুযায়ী ঘরে বসেই পেতে পারেন কোরবানির পশু। কোরবানির আগে গরুকে স্বাস্থ্যবান দেখানোর জন্য মোটাতাজাকরণের বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে প্রতিবছর। ক্রেতাদের সেই শঙ্কা দূর করার জন্য অনলাইন সাইটে লেখা থাকে, ‘১০০ ভাগ স্বাস্থ্যবান দেশী গরু, যা অর্ডার করতে পারেন ঘরে বসে।’ অনলাইন হাটে গরু-ছাগলের ছবির পাশাপাশি থাকছে পশুর ওজন, উচ্চতাসহ বিস্তারিত তথ্য। আর দরদাম পছন্দ হলেই বাসা পর্যন্ত পৌঁছে দেয়ারও দায়িত্ব নেয় এসব সাইট। শুধু ছবিই নয়, ক্রেতাদের সুবিধার জন্য পশুর বয়স, দাঁতের সংখ্যা, ওজন, চামড়ার রং, জাত, জন্মস্থান এবং প্রাপ্তিস্থানও দেয়া থাকে। ক্রেতারা চাইলে স্বচক্ষে পশু দেখতে যেতে পারেন। আর ছবি দেখেই ক্রয় করতে চাইলে বিক্রেতা সেই পশু পৌঁছে দেন ক্রেতার ঘরে। মহানগরবাসীর জন্য এমন ঝক্কিঝামেলামুক্ত প্রস্তাব উপকারী, সন্দেহ নেই!
×