ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভেনিজুয়েলাকে রুখে দিয়ে গ্রুপ সেরা মেক্সিকো

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৫ জুন ২০১৬

ভেনিজুয়েলাকে রুখে দিয়ে গ্রুপ সেরা মেক্সিকো

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বড় স্বপ্ন নিয়েই এবার শতবর্ষী কোপা আমেরিকা মিশনে এসেছে মেক্সিকো। টানা দুই ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লিখিয়ে এর যথার্থতাও প্রমাণ করেছে দলটি। তবে গ্রুপের শেষ ম্যাচে এসে হোঁচট খেয়েছে তারা। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সকালে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ভেনিজুয়েলার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে মেক্সিকো। এতে অবশ্য কোন দলেরই সমস্যা হয়নি। দু’দলের আগেই সেরা আট নিশ্চিত হয়। শেষ ম্যাচ ড্র হওয়ায় ‘সি’ গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মেক্সিকো। তিন ম্যাচে মেক্সিকো ও ভেনিজুয়েলা দু’দলেরই সমান ৭ পয়েন্ট করে ভা-ারে। তবে গোল গড়ে এগিয়ে চ্যাম্পিয়ন মেক্সিকো ও রানার্সআপ ভেনিজুয়েলা। প্রথম দুই ম্যাচে হেরে আগেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় উরুগুয়ে নিজেদের শেষ ম্যাচে সান্ত¡নার জয় পেয়েছে। জ্যামাইকাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে আসরের সর্বোচ্চ ১৫ বারের চ্যাম্পিয়নরা। হাউস্টোনের এনআরজি স্টেডিয়ামে ডিফেন্ডার জোশে ম্যানুয়েল ভেলাজকুয়েজের গোলে প্রথমে এগিয়ে যায় ভেনিজুয়েলা। মেক্সিকো যখন হতাশাজনক পরাজয় মেনে নিয়েই ম্যাচে এগিয়ে যাচ্ছিল ঠিক তখনই দলকে খাদের কিনারা থেকে রক্ষা করেন জেসুস করোনা। ওই মুহূর্তে অবশ্য সবচেয়ে বেশি মানসিক যন্ত্রণায় ছিলেন মেক্সিকোর কোচ জুয়ান কার্লোস ওসোরিও। গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবে নিজেদের সামনে এগিয়ে নিতে যেতে হলে শুধু ড্রই প্রয়োজন ছিল। এ কারণেই হয়ত মূল একাদশের বেশিরভাগ খেলোয়াড়কে বেঞ্চে বসিয়ে দল সাজিয়েছিলেন মেক্সিকান কোচ। ফলে হারের শঙ্কায় পড়েছিল তার দল। অবশ্য শেষ পর্যন্ত কোন অঘটন হতে দেয়নি ওসোরিও শিষ্যরা। ম্যাচের ১৮ মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নামা করোনা প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে বল নিয়ে একক প্রচেষ্টায় ড্রিবল করে পাঁচ খেলোয়াড়কে কাটিয়ে গোলরক্ষক ডানি হার্নান্দেজকে বোকা বানিয়ে মেক্সিকোর হার বাঁচান। ৮০ মিনিটে তার করা এই গোলটি চলমান কোপায় এখন পর্যন্ত সেরা বলে আখ্যা দিয়েছেন অনেকে। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠায় টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট আর্জেন্টিনাকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে না মেক্সিকোকে। ‘ডি’ গ্রুপ থেকে সম্ভাব্য শীর্ষ দল হিসেবে আর্জেন্টিনারই পরবর্তী রাউন্ডে ওঠা একপ্রকার নিশ্চিত। ভেনিজুয়েলার গোছানো ফুটবল দেখে এক সময় মনে হয়েছিল মেক্সিকোকে হয়ত কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হতে হবে। শেষ পর্যন্ত তা হচ্ছে না বলেই মনে হচ্ছে। ম্যাচের ১০ মিনিটে আলেজান্দ্রো গুয়েরার কার্লিং ফ্রিকিক ডি বক্সের মধ্য থেকে হেড করেন ক্রিশ্চিয়ান সান্টোস। সেই বল দারুণভাবে আয়ত্তে নেন ভেলাজকুয়েজ। অসাধারণ এক ভলি করে মেক্সিকান গোলরক্ষক জেসাস করোনাকে পরাস্ত করেন তিনি। বিরতির পর গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে ওঠে মেক্সিকো। কিন্তু একের পর এক আক্রমণ নষ্ট হয়ে যায় তাদের। অবশেষে ম্যাচ শেষের দশ মিনিট আগে ‘টেকাটিটো’ খ্যাত করোনা অবিশ্বাস্য গোল করে মেক্সিকোকে সমতায় ফেরান। ম্যাচ শেষে অপরীক্ষিত একাদশ বাছাইয়ের সিদ্ধান্তকে অবশ্য নেতিবাচক চোখে দেখেননি মেক্সিকান কোচ ওসোরিও। তিনি বলেন, একটি দলে যখন অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় থাকে তখন রোটেশন করা যেতেই পারে। এটা খেলারই একটি অংশ। আমরা সব খেলোয়াড়কে সুযোগ দিতে চেয়েছি। কারণ আমরা বিশ্বাস করি দলের জন্য সকলেই গুরুত্বপূর্ণ। ভেনিজুয়েলার বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে এমন একাদশই আমরা বেছে নিয়েছিলাম। এদিকে জ্যামাইকাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকায় পাঁচ ম্যাচের জয় খরা কাটিয়েছে উরুগুয়ে। আগের জয়টি এসেছিল এই জ্যামাইকার বিপক্ষেই চিলিতে গত বছরের আসরে। অন্যদিকে জ্যামাইকা কোপা আমেরিকায় তাদের ছয় ম্যাচই হারল কোন গোল না করেই। সান্টা ক্লারায় ম্যাচের ২১ মিনিটে আবেল এরনান্ডেস উরুগুয়েকে এগিয়ে নেয়ার পর আত্মঘাতী গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়। গোলটি আসে ৬৬ মিনিটে। এরপর ৮৮ মিনিটে বদলি হিসেবে নামা মাথিয়াস কোরুহোর গোলে বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে উরুগুয়ে। আগেই দল বিদায় নেয়ায় ম্যাচটি খেলেন লুইস সুয়ারেজ।
×