ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী- প্রত্যেকের নিজ দায়িত্ব পালন করা উচিত, কারও ;###;ওপর প্রভাব দেখানো উচিত নয়

প্রচলিত আইনেই ॥ তনু হত্যার বিচার

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৫ এপ্রিল ২০১৬

প্রচলিত আইনেই ॥ তনু হত্যার বিচার

বাংলানিউজ ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তনু হত্যার বিচার প্রচলিত আইনেই সম্ভব। এ হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রচলিত আইনেই করা হবে। সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধান বিচারপতির বক্তব্য নিয়ে কথা উঠলে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘প্রচলিত ফৌজদারি আইনে তনু হত্যার বিচার সম্ভব নয়।’ মন্ত্রিপরিষদ বৈঠক সূত্র জানায়, প্রধান বিচারপতির এ বক্তব্যের প্রসঙ্গটি আলোচনায় উঠলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি কিভাবে এটা বলেছেন জানি না। তবে প্রচলিত আইনেই এই বিচার সম্ভব। সেটাই আমরা করব।’ সূত্র জানায়, দুই মন্ত্রীকে করা আদালতে জরিমানার দ- নিয়ে কথা উঠলে বিচারপতিরা ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়েছেন বলে মন্ত্রীদের কেউ কেউ মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময়ে বলেন, রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের কার, কী দায়িত্ব সেটা সংবিধানে বলা আছে। তাই প্রত্যেকের নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করা উচিত। কারও ওপর প্রভাব দেখানো উচিত নয়। বৈঠকে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এই বিচারের জন্য নতুন কোন আইনের প্রয়োজন নেই। আমাদের দ্রুত বিচার আইন আছে, নারী-শিশু নির্যাতন দমন আইন আছে। এসব বিদ্যমান আইনেই তনু হত্যার বিচার করা হবে। শনিবার (০২ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘তনু হত্যার ঘটনা একটি আধুনিক অপরাধ। পুরনো ফৌজদারি আইন দিয়ে এর সুষ্ঠু তদন্ত, বিচার সম্ভব নয়। এ ঘটনার তদন্ত করতে হবে নতুন ডিজিটালাইজইড পন্থায়। যতই আমরা মিছিল করি না কেন, পুরনো আইন দিয়ে তা সম্ভব নয়।’ তিনি আরও বলেছিলেন, বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার সঙ্গে প্রচলিত ফৌজদারি আইনের মিল নেই। একে ঢেলে সাজাতে হবে। ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি আইন দিয়ে তনু হত্যার বিচার করা যাবে না। মন্ত্রিসভার বৈঠকের একাধিক সূত্র জানায়, প্রধান বিচারপতির এ বক্তব্যের প্রসঙ্গটি বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় উঠলে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুসহ কয়েক মন্ত্রী আলোচনায় অংশ নেন। এ সময় সংসদ সদস্যদের নিয়ে প্রধান বিচারপতির দেয়া বক্তব্য ও দুই মন্ত্রীকে আদালতের জরিমানা রায়ের বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। সূত্রগুলো জানায়, তনু হত্যার বিচার প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, বিদ্যমান আইনেই এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করা সম্ভব। নতুন আইনের প্রয়োজন নেই। ভারতে ট্রেনের মধ্যে নারী ধর্ষণ হলে দ্রুত বিচার আইন করে তার বিচার করা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে দ্রুত বিচার আইন আরও আগে থেকেই করা হয়েছে। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রচলিত আইনেই এ হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হবে বলে জানান। সূত্র আরও জানায়, এ সময় প্রধানমন্ত্রী সংসদ সদস্য ও সংসদে আইন প্রণয়ন প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতির বক্তব্য সম্পর্কে বলেন, সংসদে আইন পাস করার আগে অনেক প্রক্রিয়া পার করতে হয় এটা তো তার (প্রধান বিচারপতি) জানা আছে নিশ্চয়ই। মন্ত্রণালয় আইনের খসড়া তৈরি করে। সেটা আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিং হয়। এরপর মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদনের পর সংসদে যায়। তার পর সংসদীয় কমিটিতে যায়। এর পর সেটা পাস হয়। তিনি (প্রধান বিচারপতি) কেন এটা বলেছেন জানি না। সূত্র জানায়, দুই মন্ত্রীকে করা আদালতে জরিমানার দণ্ড নিয়ে কথা উঠলে বিচারপতিরা ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়েছেন বলে মন্ত্রীদের কেউ কেউ মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় বলেন, রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের কার, কী দায়িত্ব, সেটা সংবিধানে বলা আছে। তাই প্রত্যেকেরই নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করা উচিত। কারও ওপর প্রভাব দেখানো উচিত না।
×