ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পান্থ আফজাল

নিজের ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলুন

প্রকাশিত: ০৭:৪১, ৭ মার্চ ২০১৬

নিজের ব্যক্তিত্ব  ফুটিয়ে তুলুন

জীবন সুন্দর ও আগামীর স্বপ্নের সুন্দর পৃথিবী গড়তে প্রয়োজন নিজের প্রতি আতœবিশ্বাস আর নিজস্ব ব্যক্তিত্ব। অন্যদিকে আমাদের সবার জীবনেই অনুসরণীয় বা অনুকরণীয় এমন কেউ না কেউ আছেন যার কথাবার্তা, আচারণ ও ব্যক্তিত্ব আমাদের মনে গভীরভাবে ছাপ ফেলে যায়। কিন্তু আপনি কখনও কি ভেবে দেখেছেন কিভাবে তারা সবার প্রিয় হয়ে উঠলেন? নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে আপনিও তাদের মতো সকলের আকাক্সিক্ষত হয়ে উঠতে পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে সকলের নিকট আকাক্সিক্ষত হতে চাইলে আপনেক একজন ভাল মানুষ হতে হবে। যে কেউ এলে নিজের সুন্দর চেহারার কারণে আপনার নিকট প্রিয় নন, বরং প্রিয় হওয়ার পেছনে আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। সেসব মানুষ সকলের নিকট প্রিয় হওয়ার কারণ হচ্ছে তাদের উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব। কর্মক্ষেত্রে যখন যেখানে থাকবেন তখন শুধু সেখানেই মনোযোগ রাখুন, আবার পরিবার বা বন্ধু মহলে থাকা অবস্থায় তখন শুধু তাদের সঙ্গেই সময় কাটান। এভাবেই নিজেকে ব্যবহার করতে পারেন। মনোযোগ দিয়ে কাজ করুন। যখন যে কাজটি করছেন তখন অন্য কোন দিক মন না দিয়ে শুধু সেই কাজটিতেই মনোযোগ দিন। অফিসে আপনার চেয়ে নিচের পদের সকলের সঙ্গে আদবের সহিত কথা বলুন। একজন রিক্সা চালায় বলেই যে তাকে তুই বলে সম্বধন করতে হবে, বা বাসার কাজের লোকটি আপনার বয়সে বড় হওয়া সত্ত্বেও কাজের লোক বলে তাকে অপমান করে কথা বলার অধিকার আপনার নেই। যে ব্যক্তি নিজের চেয়ে ছোট পদের ব্যক্তিদের সঙ্গে ভাল আচরণ করেন না, তিনি কখনই একজন ভাল মানুষ হিসেবে গণ্য হতে পারেন না। অন্যদের নিকট থেকে আপনি যে সম্মানটা আশা করেন, ঠিক তেমনিভাবেই অন্যদেরও সম্মান করতে শিখুন। ছোটদের স্নেহ দিন এবং বড়দের শ্রদ্ধা করুন। নিজের সুন্দর ও পৃথক একটি ব্যক্তিত্ব সকলের নিকট তুলে ধরার চেষ্টা করুন। কারও দেখাদেখি নয়, বরং সবাই যেন আপনার অনুসরণ করতে চায় নিজেকে সেভাবেই গড়ে তুলতে চেষ্টা করুন। অন্য কারও ব্যক্তিগত ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবেন না। মনে রাখতে হবে, আপনার নিজেরও একটি ব্যক্তিগত জীবন আছে যেখানে অন্য কারও হস্তক্ষেপ আপনার কখনই পছন্দ হবে না। তাই যদি হয় তবে কেন অন্যের ব্যাপারে নাক গলাতে যাবেন? কথা বলার সময় সুন্দর সুন্দর শব্দ চয়ন করতে চেষ্টা করুন, নিজের মাতৃভাষাকে ভালভাবে আয়ত্ত করে শব্দভা-ারকে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করুন। অন্য কোন ভাষায় কথা বলার পূর্বে নিজের ভাষা সম্পর্কে ভালভাবে জ্ঞাত হোন। যে লোক নিজের ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে ভালভাবে জানেন না, সে কখনই একজন ব্যক্তিত্ববান মানুষ হতে পারেন না। শরীরের পোশাক যেমনই হোক, সেটি যেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন আর পরিপাটি হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ফরমাল বা খুব দামী পোশাক পরিধান করে সবসময় সেজেগুজে থাকলেই স্মার্টনেট আসবে তা কিন্তু নয়, তবে একেবারে অপরিষ্কার থাকা যাবে না। সবসময় নিজেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি রাখার চেষ্টা করবেন। পরামর্শ মতো সবই করলেন কিন্তু আপনার মাঝে যদি দিনের শেষে প্রশ্ন রয়ে যায়, তবে নিজেকে আর কিভাবে স্মার্ট হিসেবে তৈরি করবেন। এজন্য আপনাকে অবশ্যই নিজের ওপর আস্থা রাখুন, বিশ্বাস আনুন। যদি আপনি নিজেই আত্মবিশ্বাসী না হন তবে অন্যরা তো কখনই আপনার ওপর আস্থা আনতে পারবে না, তাই নয় কি? আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তির আলাদাই একটি বৈশিষ্ট্য থাকে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথা বলা থেকে নিজেকে বিরত রাখুন এবং অন্যদেরও এ ব্যাপারে উৎসাহ দিবেন না। বেশি কথা বলাটাই কিন্তু স্মার্টনেসের লক্ষণ নয়, বরং পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় জোড়দার কথা বলুন। নিজেকে ব্যক্তিত্ববান হিসেবে দেখাতে গিয়ে আবার অতিরিক্ত মুড বা ভাব দেখাতে যাবেন না কিন্তু। অতিরিক্ত মুড বা ভাব দেখালেই কেউ স্মার্ট হওয়া যায় না, বরং আপনার আলগা এই ভাব আরও নিজের স্মার্টনেস কমিয়ে দেয়। আয়ত্ব করুন শৃজনশীলভাবে কথা বলার অভ্যাস। বাঁকা বা জটিল কথা বলে কখনই নিজের স্মার্ট প্রমাণ করতে চাইলে আপনি বোকা বনে যাবার সম্ভাবনাই বেশি। এজন্য অবশ্যই সকলকে সম্মান দিয়ে কথা বলতে চেষ্টা করুন। অন্যের কৃতকর্মের জন্য প্রশংসা করতে শিখুন। তাদের অর্জনকে কখনই হিংসা করবেন না। আপনি কথা বলার সময় আই কন্টাক্ট করার চেষ্টা করবেন এবং হাসি মুখে কথা বলতে চেষ্টা করবেন। এতে আপনার কথার প্রতি আপনার নিজের আস্থা প্রকাশ পাবে। আপনার আশপাশের মানুষগুলোও আপনার আস্থা খুঁজে পাবে। উপরের উল্লিখিত সবই শুধুমাত্র পরামর্শ, তবে পালন করার দায়িত্বটি কিন্তু আপনারই। একটু চেষ্টা করলে আপনি অবশ্যই সফল হতে পারবেন। পারিব না এ কথাটিও বলিও না আর, কেন পারিব না তাহা ভাব একবার, একবার না পারিলে দেখ শতবার। তাই একটু চেষ্টা করে দেখুন, খুব কঠিন কিছু না। এসব ব্যাপারগুলোই কিন্তু আপনাকে করে তুলবে আরও আকর্ষণীয় ও ব্যক্তিত্ববান মানুষ। মডেল : জেনি ও শাওন
×