ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সেবা খাত নির্ভর হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ২৫ জানুয়ারি ২০১৬

সেবা খাত নির্ভর হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং

রহিম শেখ ॥ প্রায় তাৎক্ষণিকভাবে বা অতিদ্রুত শহর থেকে গ্রামে, গ্রাম থেকে শহরে সর্বত্রই টাকা পাঠানোর সুযোগ তৈরি হওয়ায় মোবাইল ব্যাংকিং জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং কেবল টাকা আদান-প্রদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং অনেক নতুন নতুন সেবা যুক্ত হয়েছে এতে। প্রতিমাসেই বাড়ছে বিভিন্ন সেবা বিল দেয়ার পরিমাণ। বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণ। ডিসেম্বরে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫শ’ ৩৭ কোটি টাকা। লেনদেন বাড়লেও গত কয়েক মাস ধরে চালু (এ্যাকটিভ) এ্যাকাউন্টের সংখ্যা কমছিল। সেই ধারা থেকে বেরিয়ে এসে ডিসেম্বরে সচল এ্যাকাউন্ট বেড়ে এক কোটি ৩২ লাখে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহকসংখ্যা সোয়া ৩ কোটি ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ডিসেম্বর শেষে মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেনে গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ১৮ লাখ ৪৫ হাজার। যেখানে ১ মাসের ব্যবধানে অর্থাৎ নবেম্বর মাসের তুলনায় ২ দশমিক ০৬ শতাংশ গ্রাহক বৃদ্ধি পেয়েছে। নবেম্বর শেষে গ্রাহক ছিল ৩ কোটি ১২ লাখ ২ হাজার। নবেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫৩৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, যা আগের মাসে ছিল ৪৯৭ কোটি টাকার বেশি। এখানে ৮ দশমিক ১১ শতাংশ বেশি লেনদেন হয়েছে। আবার গ্রাহকের পাশাপাশি বেড়েছে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিনিধি বা এজেন্ট। নবেম্বরের চেয়ে ডিসেম্বরে এজেন্টের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৬১ হাজার ১৯৮ জনে। আগের মাসে যা ছিল ৫ লাখ ৫২ হাজার ৬৫২। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গ্রাহক বৃদ্ধির সঙ্গে বেড়েছে এ্যাকটিভ (সক্রিয়) এ্যাকাউন্টের সংখ্যা। ডিসেম্বরে সচল এ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৩২ লাখ ১৮ হাজার। আগের মাসে সচল এ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ ৪৭ হাজার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, গত ডিসেম্বর মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রায় ১৬ হাজার ১২৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে, যা নবেম্বর মাসে ছিল ১৪ হাজার ৯১৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে মাসিক লেনদেন বেড়েছে ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এ প্রসঙ্গে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, উৎসবকে সামনে রেখে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা তুলনামূলকভাবে একটু বেশি ব্যবহার হয়েছে। এজন্য সেপ্টেম্বরে লেনদেন বাড়লেও অক্টোবরে কিছুটা কমেছে। সচল হিসাবের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে নবেম্বর ও ডিসেম্বরে লেনদেন বেড়েছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, আগের মাসের তুলনায় ডিসেম্বরে প্রবাসী আয়ের লেনদেন বেড়েছে ১৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এ সময় লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা, যা নবেম্বরে ছিল ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এ সেবার মাধ্যমে ডিসেম্বর মাসে টাকা উত্তোলন (ক্যাশ আউট) করা হয়েছে ৫ হাজার ৯৩১ কোটি টাকা, যা আগের মাসে ছিল ৫ হাজার ৪৭৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। ডিসেম্বর মাসে অন্যের হিসাবে টাকা পাঠিয়েছেন এমন লেনদেনের পরিমাণ ২ হাজার ৭৫০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, যা আগের মাসে ছিল ২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। ডিসেম্বরে বেতন পরিশোধ করা হয়েছে ১৫৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা, যা আগের মাসে ছিল বেতন ১৪০ কোটি ৯১ লাখ টাকা। ডিসেম্বরে সেবা-বিল পরিশোধ হয়েছে ১০৯ কোটি ১২ লাখ টাকা। এর আগের মাসে যা ছিল ৯৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
×