ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ডিসেম্বরে কর্ণফুলীর তলদেশ দিয়ে দেশের প্রথম টানেল নির্মাণ শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৪ অক্টোবর ২০১৫

ডিসেম্বরে কর্ণফুলীর তলদেশ দিয়ে দেশের প্রথম টানেল নির্মাণ শুরু

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ বহুল প্রতীক্ষার চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণের কাজ আগামী ডিসেম্বরে শুরু হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এর আগে আগামী নবেম্বরের শেষদিকে চীনা প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর চট্টগ্রামের ঈশা খাঁ ঘাঁটির ট্রেনিং ব্লকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে মন্ত্রী এ কথা জানান। এর আগে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে বহু লেন বিশিষ্ট টানেল নির্মাণ প্রকল্প রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন যোগাযোগ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। বৈঠকে টানেল নির্মাণসংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কাজের বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। মন্ত্রী জানান, এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য কর্ণফুলীর তলদেশে প্রস্তাবিত টানেল নির্মাণের কাজ ২০২০ সালের মধ্যে শেষ করা হবে। চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোস্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি) সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এর মধ্যে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা দেবে চীন সরকার। অবশিষ্ট টাকা দেবে বাংলাদেশ সরকার। মন্ত্রী জানান, প্রকল্প বাস্তবায়ন মেয়াদকাল ২০২০ সাল ধরা হলেও তা ২০১৯ সালের মধ্যেও শেষ হতে পারে। ওবায়দুল কাদের বলেন, কর্ণফুলী টানেল নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ করতে পদ্মা সেতুর মতো গুরুত্ব দেয়া হবে। কারণ এ বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী অনেক গুরুত্ব দিয়েছেন। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম শহরে নিরবচ্ছিন্ন ও যুগোপযোগী সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা, কর্ণফুলী নদীর পূর্বতীর ঘেঁষে গড়ে উঠা শহরে সঙ্গে ডাউন-টাউনকে যুক্ত করা এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের মধ্যে নতুন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যেই গত ২০১৩ সালে এ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। ৩৪০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে এ টানেল চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে কর্ণফুলী নদীর দুই কিলোমিটার ভাটির দিকে নেভাল একাডেমির কাছে এবং সিইউএফএলের কাছে বাহির পথ নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২২ ডিসেম্বর এ টানেল নির্মাণে সিসিসিসি’র সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি হয়। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি কমার্শিয়াল প্রস্তাব দেয় সিসিসিসি। প্রস্তাবের কারিগরি দিক পরীক্ষা ও সিসিসিসি’র সঙ্গে সমঝোতার জন্য দুই বিদেশী ও এক দেশী পরামর্শক নিয়োগ করা হয়। গত ২৪ জুন সরকারী অর্থনৈতিক সংক্রান্ত মন্ত্রিসভায় সিসিসিসি’র সঙ্গে ৭০৫ মিলিয়ন ডলারে চুক্তি অনুমোদন হয়। এরপর ৩০ জুন কমার্শিয়াল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তিনি জানান, এরই মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিওলজিক সার্ভে ও সাব অয়েল ইনভেস্টিগেশনের কাজ শুরু করেছে। চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্ব কমাতে পায়রাবন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে- এমন এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, আমাদের এক আওয়ামী লীগ নেতা এমন মন্তব্য করেছেন। না জেনে এমন কথা বলা উচিত নয়। এটি বাস্তবায়িত হলে এটিই হবে দেশে নদী তলদেশের প্রথম টানেল। ‘কাজ নিয়ে তা সম্পন্ন করবেন না- এটা সহ্য করা হবে না’ ॥ এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাজ শেষ না হলে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন সড়ক ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, কাজ নিয়ে কাজ সমাপ্ত করবেন ন-এটা আর সহ্য করা হবে না। এ জন্য দায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, প্রকল্প পরিচালক, প্রকৌশলীসহ সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর চট্টগ্রামের ঈশা খাঁ ঘাঁটির এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, ডিসেম্বরে কাজ শেষ না হলে আর কোন সময় বাড়ানো হবে না।
×