
ছবি: সংগৃহীত
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার জামালদীতে ট্রেলার ট্রাকের ধাক্কায় দেয়াল ধসে দুই শিশু শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় এক শিশুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা হোসেন্দী-জামালদী সড়ক এক ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
প্রথমে দুই শিশুর মধ্যে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও, পরে শিশুটি আহত অবস্থায় কোনো এক হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন আহত শিশুর নানা ইমান আলী।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে হোসেন্দী-জামালদী সড়কের হাজী সিরাজুল হক স্কুল সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত দুই শিক্ষার্থী হলো—গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের জামালদী গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে সারাফাত (৫) ও একই গ্রামের বিল্লাহ হোসেনের মেয়ে জামিয়া (৫)। তারা দুজনেই হাজী সিরাজুল হক স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সম্পর্কে সারাফাত ও জামিয়া চাচাতো ভাই-বোন। স্কুল থেকে বাসায় ফিরে সকালের নাস্তা খেয়ে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়েছিল তারা।
এ সময় রাস্তার পাশে সামুদা কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির একটি ট্রেলার ট্রাক জামালদী বাসস্ট্যান্ডের দিকে যাচ্ছিল। গাড়িটি দেখে তারা দেয়ালের দিকে সরে যায়। কিন্তু ট্রেলার ট্রাকটি দেয়ালে ধাক্কা দিলে সেটি দুই শিশুর ওপর ধসে পড়ে।
এসময় আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা দিনের বেলায় এই সড়কে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির মালবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় তারা ঘাতক ট্রেলার ও একটি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন গজারিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তার আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা সড়ক থেকে সরে গেলে এক ঘণ্টা পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিকে আহতদের স্বজনরা জানান, ‘আহত দুই শিশুর মধ্যে সারাফাতের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
বিষয়টি জানতে সামুদা কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিতে গেলে গণমাধ্যমকর্মীদের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা এসে জানান, ‘ট্রেলার ট্রাকের মালিক আমরা নই। আমরা একটি এজেন্সি থেকে গাড়ি ভাড়া করে আনি। গাড়ি-সংক্রান্ত বিষয়ে সব দায়ভার তাদের।’
গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘এ ধরনের একটি খবর পেয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘাতক গাড়িটি স্থানীয় জনতা আটক করেছে, আমরা তা উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি।’
গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলাম। দুই পক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিকেলে বিষয়টি নিয়ে আমরা বসব।’
রাকিব