
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান খানকে চাকরিচ্যুত না করে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে বদলি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় আদিবাসী ছাত্রসমাজ।
রোববার (২৭ জুলাই) সকালে বান্দরবান শহরের মুক্তমঞ্চের সামনে এক মানববন্ধনের আয়োজন করে বান্দরবানের আদিবাসী ছাত্রসমাজ।
এসময় বক্তারা বলেন, অপরাধীকে শাস্তি না দিয়ে বরং পার্বত্য জেলাগুলোতে “ডাম্পিং জোন” বানানোর অপচেষ্টা চলছে। এই মনোভাব থেকে বের হয়ে এসে অবিলম্বে বিতর্কিত কর্মকর্তার পদায়ন বাতিল করে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এছাড়া মনিরুজ্জামান খানের বদলিকে বাতিল করে তাকে অবিলম্বে শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তব্যে ছাত্রনেত্রী লাবণী তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, বান্দরবান কোনো ময়লার স্তুপ নয়, ডাস্টবিন নয়। এটি সম্প্রীতির এক আবাসভূমি। দুর্নীতিবাজ, চরিত্রহীন লম্পট কর্মকর্তাদের জায়গা এখানে হতে পারে না। বার বার পার্বত্য জেলাগুলোকে পিছিয়ে রাখার জন্য এ ধরনের বিতর্কিত ও অযোগ্য কর্মকর্তাদের এখানে বদলি করা হয়। মনিরুজ্জামান খানের মতো একজন লম্পট কর্মকর্তার পদায়ন শুধুমাত্র পাহাড়ি জনগোষ্ঠী নয়, বরং পুরো বান্দরবানবাসীর জন্য হুমকি। লাবণী আরও বলেন, তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত না করে বরং পুরস্কৃত করার মতো বদলি করে পার্বত্য অঞ্চলে পাঠানো হয়েছে এটি আমাদের জন্য চরম অবমাননাকর। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
এসময় ছাত্রনেতা এডিসন চাকমা বলেন, বান্দরবানে কেউ সন্ত্রাসী নয়। আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষ। আমাদের জায়গা যেন শাস্তিপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাসনের জায়গা হিসেবে ব্যবহার না করা হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই বান্দরবান'সহ পার্বত্য অঞ্চলের ওপর প্রশাসনিক বৈষম্য চলেই আসছে। এই বৈষম্য বন্ধ করতে হবে। অপরাধী কর্মকর্তাকে তার কর্মস্থলেই উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে, বদলি নয়।
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ছাত্রনেতা এডিসন চাকমা, ফিলিপ খেয়াং, নেলসন ত্রিপুরা, শিমুল তঞ্চঙ্গ্যা প্রমুখ।
উল্লেখ্য, মানিকগঞ্জের সিংগাইর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার প্রতিবাদে অভিভাবকরা সহকারী শিক্ষাঅফিসার মনিরুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে গত ১৩জুলাই সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলে ২৩জুলাই মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে তাকে বান্দরবানে বদলী করা হয়। তারপর থেকে বান্দরবানবাসী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন ভাবে প্রতিবাদ করে আসছে।
শেখ ফরিদ