
বাংলাদেশের গ্রামীণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে চোখের রোগ একটি সাধারণ সমস্যা। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নানা জটিলতা তৈরি হলেও দারিদ্র্য, সচেতনতার অভাব এবং চিকিৎসাসেবার সীমাবদ্ধতার কারণে অনেকেই সময়মতো প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে পারেন না। এই বাস্তবতাকে সামনে রেখে ব্র্যাক মাইক্রোফাইন্যান্স প্রোগ্রামের উদ্যোগে সম্প্রতি ফরিদপুর সদর উপজেলার চৌরঙ্গীমোড়, ব্র্যাক অফিস চত্বরে আয়োজন করা হয় বিনা মূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প।
‘দৃষ্টি ফিরে পাওয়ার পথ—গ্রামীণ চক্ষু সেবার উদ্যোগ’ শিরোনামে আয়োজিত এই ক্যাম্পের মূল লক্ষ্য ছিল গ্রামীণ দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগণের মাঝে দৃষ্টিশক্তির উন্নয়ন, কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জীবনমান উন্নয়নে সহায়তা করা।
ক্যাম্পে ৪০ বছরের বেশি বয়সী দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। পাশাপাশি নারী, বিধবা, প্রবীণ এবং কৃষি ও শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট এমন ব্যক্তিদের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়, যারা দৈনন্দিন কাজে চোখের ওপর নির্ভরশীল।
চিকিৎসা ক্যাম্পে বিনা মূল্যে চোখের পরীক্ষা, প্রয়োজন অনুযায়ী চশমা বিতরণ, চোখের রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার করার ব্যবস্থাও রাখা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ইয়াসির আরাফাত (সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার), মলয় কুমার সরকার (সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার), মোহাম্মদ আতিকুর রহমান (জোনাল ম্যানেজার, এইচআরডি), মোহাম্মদ ফারুক-ই আজম (জোনাল ম্যানেজার, মাইক্রোফাইন্যান্স), মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান (জোনাল ম্যানেজার, মনিটরিং), মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম (রিজিওনাল ম্যানেজার), মোহাম্মদ জামির আলী (ডিভিশনাল কো-অর্ডিনেটর), অখিল কুমার সরকার (এরিয়া ম্যানেজার), অলোক কুমার বিশ্বাস (ব্রাঞ্চ ম্যানেজার), রফিকুল ইসলাম (রিজিওনাল কো-অর্ডিনেটর) এবং সুভাষ কুমার সরকার (সিনিয়র অফিসার, অ্যাডমিন)।
বক্তব্যে মলয় কুমার সরকার, ফারুক-ই আজম ও মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, “এই ধরনের উদ্যোগ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। ব্র্যাক চায়—সব শ্রেণির মানুষ যেন সহজেই প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা পেতে পারে। এই ক্যাম্প তারই একটি বাস্তব উদাহরণ।”
ব্র্যাক মাইক্রোফাইন্যান্স প্রোগ্রামের কর্মকর্তা, স্টার এসএসএল, লিড জেনারেশন টিম এবং স্থানীয় কর্মীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ক্যাম্পটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়।
এই প্রোগ্রামে প্রায় ৪০০ রোগীকে দেখা হয় এবং ২৮০টি চশমা বিনামূল্যে বিতরণ করা হয় গ্রামীণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে।
এ ধরনের আয়োজন ভবিষ্যতেও নিয়মিতভাবে চলমান থাকবে বলে আয়োজকরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সানজানা