
ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ।
সৈয়দপুরে সরকারি তুলসীরাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় নামে একটি শতবর্ষী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে গ্যারেজ নির্মাণ করায় শিক্ষকদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, ১৯১৪ সালে বাবু তুলশিরাম আগরয়ালের দানকৃত ২.৮৯ একর ভুসম্পত্তিতে গড়ে ওঠে নারী শিক্ষার প্রথম আলোকবর্তিকা। ২০১৭ সালে এটি জাতীয়করণের মর্যাদা পায়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৫ শত শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় করনের পর গত ২০২৩ সালে ৪ এপ্রিল যোগদান করেন সহকারী শিক্ষক শিল্পী আক্তার। তিনি নীলফামারীর ডিমলা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বদলি হয়ে এ প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০২৪ সালের ৭ মে থেকে প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) হয়ে সরকারি অর্থে শুরু করেন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন। আধুনিকায়ন করেন শ্রেণি কক্ষ, শিক্ষকের বাসভবন। শিক্ষকদের গাড়ি রাখার জন্য একটি টিনশেডের গ্যারেজ নির্মাণ করেন। সাথে শিক্ষার্থীদের শতভাগ ফলাফলের সফলতার লক্ষ্য অর্জনে পাঠদান ও পড়াশোনার মান্নোনয়নে বিপ্লব ঘটান। এতে বিষয়টি অনেক শিক্ষক ভালো ভাবে গ্রহণ করেনি। তারা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধাচারণ করেন। তারা বিভিন্নজনের কাছে প্রধান শিক্ষকের সমালোচনা করেন।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের কজন শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষক শিল্পী বেগম (ভারপ্রাপ্ত) যোগদানের পর তাঁর গাড়ির জন্য বিদ্যালয়ের মাঠে একটি গাড়ির গ্যারেজ তৈরি করেছেন। যার ফলে শিক্ষার্থীরা টিফিনকালীন শারীরিক চর্চা তথা খেলাধুলা করতে পারছে না। এনিয়ে নীলফামারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্তে চেয়ে ওই প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) শিল্পী আক্তার জানান, আমার আগেও এই প্রতিষ্ঠানে ২ জন প্রধান শিক্ষক কর্মরত ছিলেন। তারা সরকারের দেয়া অর্থ কি করতেন তা তারাই ভালো জানেন। আমি এই প্রতিষ্ঠানে যোগদানের পর দেখি প্রধান শিক্ষকের রুম, সহকারী শিক্ষকদের রুম, ক্লাস রুম, ও শিক্ষকের বসবাসের ঘরবাড়ির অবস্থা বেহাল এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বাইসাইকেল ও গাড়ি রাখার জায়গা নেই। আমি সরকারের দেয়া অর্থে সেগুলোর সবই সংস্কার করেছি। গাড়ির গ্যারেজ নির্মাণে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলায় কোনো সমস্যাই হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, আমি সরকারি চাকরি করি, সরকার যেখানে বদলি করবেন সেখানেই চলে যেতে হবে। এই প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, আমি সাথে করে নিয়ে যাবো না। সরকারের দেয়া অর্থ যদি ভাগাভাগি করে দিয়ে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন না করতাম তাহলে অনেকেরই চোখের কাটা হতাম না। সরকারের দেয়া অর্থে সরকারি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন হয়েছে এনিয়ে যারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন, তারা তুলশিরাম বালিকা বিদ্যালয়ের ভালো চাননা বলে জানান তিনি।
মিরাজ খান