ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২

চাঁদাবাজির হুমকিতে থমকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের নির্মাণ কাজ 

নিজস্ব সংবাদদাতা, রাজবাড়ী

প্রকাশিত: ১৫:২৪, ২২ জুলাই ২০২৫

চাঁদাবাজির হুমকিতে থমকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের নির্মাণ কাজ 

ছবি: জনকণ্ঠ

চাঁদাবাজ চক্রের দাবিকৃত চাঁদা না দেওয়ায় থমকে গেছে ২৫০ শয্যার রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতালের লিফট স্থাপনের কাজ। বিষয়টি নিয়ে রোববার (২০ জুলাই) জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার।


রাজবাড়ী অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওই সভায় গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম জানান, স্থানীয় একটি চাঁদাবাজ চক্র হাসপাতালের লিফট ইনস্টলেশনের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে নিয়মিত হুমকি দিচ্ছে। এতে করে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট লোকজন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “একাধিকবার বিভিন্ন গ্রুপ এসে চাঁদা দাবি করেছে। কেউ কেউ চাঁদা পেয়েছে, এরপর আবার নতুন চক্র এসে হুমকি দিচ্ছে। ঠিকাদার বুঝে উঠতে পারছে না কার হাতে চাঁদা দেবে।”
চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সুপার স্টার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ও গণপূর্ত বিভাগ পৃথক দুটি চিঠি দিয়েছে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং সদর থানায়।
একটি চিঠিতে বলা হয়, গত ১৯ জানুয়ারি দুপুরে ৮-১০ জন অস্ত্রধারী ব্যক্তি নির্মাণ সাইটে প্রবেশ করে লিফটের মূল্যবান মালামাল নিয়ে যেতে চায় এবং চাঁদা না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ফলে সাইটে থাকা কর্মীরা আতঙ্কে কাজ বন্ধ রাখে।
এ প্রসঙ্গে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, “চাঁদাবাজির বিষয়টি সভায় আলোচনায় এসেছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। রাজবাড়ীতে কোনো চাঁদাবাজি সহ্য করা হবে না।”
রাজবাড়ী নাগরিক কমিটির সভাপতি জ্যোতি শঙ্কর ঝন্টু বলেন, “হাসপাতালের মতো মানবিক স্থানে চাঁদা দাবি করা শুধু রাষ্ট্র নয়, সমাজের জন্যও হুমকি। দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে।”


হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান জানান, বর্তমানে তেমন কোনো সমস্যা নেই। দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ বুঝে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে হাসপাতালের নির্মাণ কাজ স্বাভাবিক করা হবে।”


উল্লেখ্য, রোগীদের ভোগান্তি লাঘবে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালকে ২০১৮ সালে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের কাজ শুরু হয়। এর আওতায় ৩ কোটি ৯১ লাখ ৮১ হাজার টাকা ব্যয়ে লিফট স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে, যা বর্তমানে চাঁদাবাজির কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

শিহাব

×