
দৈনিক জনকণ্ঠ
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজর কারণে চরম দুর্ভোগ পড়েছে ২৪ গ্রামের প্রায় ২৯ হাজার মানুষ। উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের উত্তর ছাট গোপাল পুর বিলের উপর ১৯৬৫ সালে নির্মিত ব্রিজটির এক পাশে মাঝ খানে ভেঙে দেবে গেছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রিজের তলায় মারাত্মক ফাটল দেখা দিয়েছে। ভিমের অংশের পলেস্তার খসে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে মরিচা ধরা রডের কাঠামো। ফাটল ধরা অংশে বেশ খানিকটা দেবে গেছে।
দুর্ঘটনা এড়াতে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ব্রিজের দুই পাশের ভাঙ্গা অংশে লাল কাপড় বেঁধে নিশান উড়ানো হয়েছে। দুই পাশে দুজন গ্রাম পুলিশ মালবাহী গাড়ি, যাত্রীবাহী অটো থামিয়ে দিচ্ছেন। তবে খালি গাড়ি ও পায়ে হেঁটে মানুষ পারাপার হচ্ছে। মালামাল থাকলে তা পরিমাণ কমিয়ে মাথায় করে পার করছেন।
উপজেলার সাথে শিলখুড়ি ইউনিয়নের একমাত্র সংযোগ সড়কের উপর নির্মিত ব্রিজটি দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, কৃষক, দিনমজুর, ব্যবসায়ীসহ অসংখ্য মানুষ যাতায়াত করেন। একইসঙ্গে চলাচল করে ছোট-বড় সকল প্রকার যানবাহন।
গত ১৪ জুলাই গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজটি হঠাৎ করে ভেঙ্গে যাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি পুরো সড়ক ব্যবস্থাকেই অকার্যকর করে তুলেছে।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আনসার আলী ও হাফিজ জানান, প্রয়োজনের তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ব্রিজ পারাপার হতে হচ্ছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা না গেলে শিলখুড়ি ইউনিয়নের সাথে উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।
স্থানীয় অটো চালক মনির উদ্দিন জানান, অটো নিয়ে ব্রিজে উঠলে ব্রিজ নড়ে উঠে ভয়ে ভয়ে পার হয়ে আশি। ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়লে ভোগান্তির শেষ থাকবে না।
ব্যবসায়ী জিন্না জানান, গাড়ি যেতে পারছে না ব্রিজের একপাশে ধান একপাশে বালু আনলোড করা হচ্ছে। লেবার মাথায় করে পারাপার করছে। এতে করে আমার খরচ অনেক বেড়ে যাচ্ছে। ব্রিজের জন্য লাভের জায়গায় এখন লোকসান গুনতে হবে।
শিলখুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ জনকন্ঠকে জানান, ব্রিজটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। আমার ইউনিয়নের ২৪টি গ্রামের প্রায় ২৯ হাজার মানুষ ব্রিজটি ব্যবহার করেন।
জনসাধারণ ও শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন পারাপার হচ্ছে। এটি ভেঙ্গে গেলে আমার ইউনিয়নের সাথে উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। তাই নতুন সেতু নির্মাণের আগে। আপাতত চলাচলের জন্য জরুরি ভিত্তিতে একটি বেইলি ব্রিজের জন্য আবেদন করেছি।
উপজেলা প্রকৌশলী ইনছাফুল হক সরকার জনকন্ঠকে জানান, ব্রিজটি অনেক আগেই আমরা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছি। প্রকল্প পরিচালক মহোদয়কে চিঠি দেওয়া আছে। নির্বাহী প্রকৌশলী মহোদয়কে আমার দপ্তর থেকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি আরসিসি গার্ডার ব্রিজটি বসে গেছে। এটি দ্রুত নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।
হ্যাপী