ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২

প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চলছে বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ২৩:৪৩, ৫ জুলাই ২০২৫

প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চলছে বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম

ছবি: জনকন্ঠ

যে কোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে ভবন! এমন ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে পাঠদান চলছে ফটিকছড়ির রোসাংগিরি আরবানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

জানা গেছে, ফটিকছড়ি উপজেলার সমিতিরহাট ইউনিয়নের রোসাংগিরি আরবানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯২১ সালে স্থাপিত হয়। ১৯৯৩-১৯৯৪ অর্থবছরে দ্বিতলবিশিষ্ট বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টার ভবন নির্মাণ করে দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। ৭-৮ বছর আগে ভবনের পিলারে ফাটল দেখা দিলে তা আস্তর করে সংস্কার করা হয়। পরে সেই প্লাস্টারও ঝরে যায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের প্রত্যেকটি পিলারে ফাটল ধরেছে। মরিচা পড়ে রড উন্মুক্ত হয়ে গেছে। ২৬টি পিলারের মধ্যে প্রায় সব কটির অবস্থাই একই। এটি বিদ্যালয় ভবন কাম সাইক্লোন শেল্টার হওয়ায় কোনো পার্টিশন ওয়াল নেই। ফলে যেকোনো মুহূর্তে ভবন ধসে পড়ে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। এমন ঝুঁকি নিয়েই ২৭০ শিক্ষার্থী এখানে ক্লাস করছে। ৯ জন শিক্ষক পাঠদানে নিয়োজিত আছেন।

বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী আইমান এবং ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সালমা, ফাহমিদা ও রায়হান বলেন, তাদের বিদ্যালয় ভবনের পিলারে ফাটল ধরেছে। ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষে পড়তে খুব ভয় লাগে। একটা নতুন ভবন নির্মাণ করা হলে আনন্দে-আনন্দে পড়ালেখা করতাম।

সহকারী শিক্ষক সুরজিৎ দেব বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয় ভবনের পিলারে ফাটল ধরেছে। জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। এই ভবনটি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের দাবি করছি।"

টিটু চৌধুরী নামে এক অভিভাবক বলেন, "ছেলে-মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে।"

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নুরুচ্ছাফা বলেন, "২০১৪ সালে পিলারে ফাটল দেখা দেয় এবং ছাদ থেকে পানি পড়ে। তখন শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করি। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে বিশ্ব ব্যাংক থেকে ৭ লাখ টাকার বরাদ্দে বিভিন্নভাবে সংস্কার করা হয়। কিন্তু দুই বছর আগে থেকে আবারও পিলারে ফাটল দেখা দেয়। উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসকে জানিয়েছেন। কর্তৃপক্ষের নিকট দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।"

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হাসান মুরাদ চৌধুরী বলেন, "ইতোমধ্যে নতুন ভবনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। তবে এক বছরের মধ্যে কোনো নতুন ভবন হবে না। আগামী দুই দিনের মধ্যে অপসারণ করে অস্থায়ীভাবে পাঠদানের ব্যবস্থা করা হবে।"

Mily

×