ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৫ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২

কুড়িগ্রামের সাত উপজেলায় শুরু হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের ফিডিং কর্মসূচি

মোঃ শাহীন আলম, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ২৪ জুন ২০২৫; আপডেট: ২০:৫৩, ২৪ জুন ২০২৫

কুড়িগ্রামের সাত উপজেলায় শুরু হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের ফিডিং কর্মসূচি

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পুষ্টি ঘাটতি পূরণ, শ্রেণিকক্ষে মনোযোগ বাড়ানো ও ঝরে পড়া রোধে দেশের ১৫০টি উপজেলায় চালু হতে যাচ্ছে ‘স্কুল ফিডিং কর্মসূচি’। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। কর্মসূচিটি জুলাই মাস থেকে শুরু করার পরিকল্পনা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে তা বাস্তবায়ন সম্ভব না হলে আগস্ট মাস থেকে কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

গত ২১ জুন, শনিবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের যুগ্মসচিব এবং স্কুল ফিডিং কর্মসূচির প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, সরকার নিজস্ব অর্থায়ন এবং বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় দুটি পৃথক প্রকল্পের মাধ্যমে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে।

ফিডিং কর্মসূচির আওতায় দেশের আট বিভাগের ৬২ জেলার মোট ১৫০টি উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন শ্রেণিকক্ষে পুষ্টিকর খাবার পাবে। এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ১৯ হাজার ৪১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। নির্বাচিত উপজেলাগুলোর মধ্যে ১৩৫টি উপজেলা অতি উচ্চ বা উচ্চ দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকায় অবস্থিত, যেখানে শিক্ষা ও পুষ্টির ঘাটতি দীর্ঘদিনের বাস্তবতা। বাকি ১৫টি উপজেলা অপেক্ষাকৃত নিম্ন দারিদ্র্যপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত হলেও কর্মসূচির প্রভাব মূল্যায়নের জন্য সেগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলার সাতটি উপজেলা—ভুরুঙ্গামারী, চিলমারী, কুড়িগ্রাম সদর, নাগেশ্বরী, রাজিবপুর, রাজারহাট ও রৌমারী—এই কর্মসূচির আওতায় এসেছে। জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, এসব উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

কর্মসূচির আওতায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সপ্তাহজুড়ে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ করা হবে। রবিবার, মঙ্গলবার এবং বৃহস্পতিবার দেওয়া হবে বনরুটি ও সিদ্ধ ডিম। সোমবার পরিবেশিত হবে বনরুটি ও ইউএইচটি দুধ। বুধবার দেওয়া হবে ফর্টিফাইড বিস্কুট ও কলা অথবা স্থানীয় মৌসুমি ফল। এই বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শারীরিক বিকাশ, পুষ্টির ভারসাম্য এবং স্কুলমুখী আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই প্রকল্প কেবল শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত করবে না, বরং দীর্ঘমেয়াদে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন, দারিদ্র্য নিরসন এবং সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি, স্কুলে উপস্থিতি বাড়বে এবং ঝরে পড়ার হার কমবে বলেও আশা করা হচ্ছে।

প্রকল্পের সার্বিক তদারকিতে থাকবে একটি যৌথ পর্যবেক্ষণ কমিটি, যেখানে শিক্ষক, অভিভাবক, স্থানীয় প্রশাসন এবং শিক্ষা বিভাগের প্রতিনিধিরা সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকবেন।

আফরোজা

×