দীর্ঘদিন পর তিস্তা নদীর বুকে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে সুস্বাদু বৈরালি মাছ। তিস্তা নদীর প্রাকৃতিক স্বচ্ছ পানির জোয়ারে ভেসে আসা বৈরালি মাছের দেখা মিলছে ঝাঁকে ঝাঁকে—আর জেলে পাড়ায় জেলেদের মুখে ফিরেছে হাসি।
রংপুর জেলার হারাগাছের কোল ঘেঁষা লালমনিরহাটের প্রেমের বাজার, তালপট্টি, চিনাটুলি, হাটসহ আশপাশের বাজারগুলোতে এখন বৈরালি মাছের রমরমা বাজার বসেছে। স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘বৈরালি’ মাছটির বৈজ্ঞানিক নাম Barilius barila। মাছটির শরীর সাদা, তবে বুকের নিচে হালকা হলুদ বর্ণ ধারণ করলে সেটিই পরিপক্বতার চিহ্ন। তখন এই মাছের স্বাদ হয় অতুলনীয়।
তিস্তা পাড়ের জেলে আজিজুল ইসলাম বলেন, “গত কয়েক বছর নদীর পানি কমে যাওয়ায় বৈরালি মাছ প্রায় হারিয়ে যাওয়ার পথে ছিল। কিন্তু এখন তিস্তায় স্বচ্ছ পানি আসায় নদীতে আবার এই জাতের মাছগুলো ফিরে এসেছে। এত মাছ জীবনে কমই দেখেছি!” তিনি আরও বলেন, “ভারতের উজানে একাধিক বাঁধের কারণে পানি ও স্রোতের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হওয়ায় প্রজননেও সমস্যা ঘটেছে। নদীতে ঘোলা পানি চলে এলে মাছ গা ঢাকা দেয় গভীরে। তবে মে মাসে উজান থেকে স্বচ্ছ পানি আসায় বৈরালি মাছের আগমন ঘটেছে ঝাঁকে ঝাঁকে।”
প্রতিটি বাজারেই মাছটির চাহিদা চোখে পড়ার মতো। বৈরালি মাছের স্বাদ অতুলনীয় হওয়ায় দাম একটু বেশি হলেও ক্রেতারা নির্দ্বিধায় কিনছেন। শুধু বৈরালি নয়, সঙ্গে ধরা পড়ছে চিংড়ি, বালিয়া, টেংরা, পাবদা, পুঁটি, চেলা, ঢেলা ও দারকাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ। তিস্তার বুক জুড়ে বৈরালি মাছের আগমনে যেন নদী ফিরে পেয়েছে তার প্রাণ। আর এতে করে হাসি ফুটেছে জেলে পাড়ার মানুষ ও মাছ ব্যবসায়ীদের মুখে।
তবে আকারভেদে বৈরালি মাছের দাম রাখা হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।
সানজানা
