বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, আমরা আজকে স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই শহীদের রক্ত তখনই শান্তি পাবে, যখন দেখবে ঘাতকের বিচার হয়েছে, এদেশে আর কখনো স্বৈরাচার আসার সম্ভাবনা নেই, গণতন্ত্র তার আসল রূপ অর্থাৎ আমার ভোট আমি দিবো, যাকে খুশি তাকে দিবো, নির্ভয়ে এবং নি:সঙ্কোচে দিবো। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ হবে তখনই যখন শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে অর্থাৎ গণতন্ত্র পুনঃ প্রতিষ্ঠিত হবে। গাজীপুরের শ্রীপুরে জুলাই আগস্ট আন্দোলনে আহত ও শহীদ পরিবারের স্বজনদের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেছে বিএনপি। বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তাদের হাতে এ সহায়তা তুলে দেন।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে জেলার শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা (মুলাইদ) এলাকার আর এস ক্যাফে রেষ্টুরেন্টের হলরুমে আনুষ্ঠানিকভাবে এ সহায়তা প্রদান করেন।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, সবার আগে বাংলাদেশ। কাজেই আগামীর বাংলাদেশ যদি করতে হয় তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য যে আন্দোলন সংগ্রাম চলছিল তার জন্য আজকে আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি। জনগণ যেন দেশের মালিকানা ফেরত পান, সেজন্যই পাবলিক পঙ্গু হয়েছে, আপনি আপনার ছেলেকে হারিয়েছেন। কাজেই আমরা তখন রাজপথ থেকে সরে যাব, যখন জনগণ তার অধিকার অর্থাৎ এই দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে, মানুষ তার ইচ্ছা অনুযায়ী আগামী দিনে যাকে দায়িত্ব দেওয়ার তাকে দায়িত্ব দেওয়ার সুযোগ পাবে। সেই লক্ষ্য যতদিন পর্যন্ত বাস্তবায়ন না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত তারেক রহমানের নেতৃত্বে এদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ ঐক্যবদ্ধ। বাপ্পির (জুলাই আন্দোলনে আহত) আত্মা শান্তি পাবে, যখন দেখবে এই দেশে আইনের শাসন আছে। আর কথা বললে গুলি করে মেরে ফেলে না, কেউ আর না খেয়ে থাকে না, দুর্নীতি করে মিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ থেকে কেউ আর পাচার করে না। অর্থাৎ এই দেশ আপনাদের আমাদের সবার। বাংলাদেশের মানুষ শহীদ হয়েছে রক্ত দিয়েছে, তারা আজকে পঙ্গুত্ববরণ করেছে। আগামীর বাংলাদেশ সবার জন্য বসবাসযোগ্য একটি সুশাসনের বাংলাদেশ হয়, তাহলেই দেখা যাবে বাপ্পির আত্মাও শান্তি পাবে, তার বাবার আত্মাও শান্তি পাবে। আমরা সবাই আশাবাদী আজকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নিয়ে একটু যে ধোঁয়াশা, যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে নির্বাচন নিয়ে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে কটা দিন বক্তব্য দিয়েছে বারবার বলেছে সবার আগে আমাদের দেশ, সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আগামী দিনের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে দেশ রাজনৈতিকভাবে সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি হবে, জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফেরত পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে, ঘাতকের বিচার হবে।
তিনি আরও বলেন, সংস্কার নির্বাচনের জন্য যেটুকু প্রয়োজন সেটুকু হবে এবং সংস্কার দেশের প্রয়োজনে চলতে থাকবে। যারা লুণ্ঠনকৃত টাকা বিদেশে পাচার করেছে সেগুলো ফেরত নিয়ে বাংলাদেশ পুনর্গঠনে ব্যয় করা হবে। আমার মনে হয় আগামীকালকের আলোচনা থেকে এরকম একটি বার্তা দেশবাশী পাবে। আপনারা দেখতে পারবেন কিছুদিনের ভিতরেই বাংলাদেশের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি হবে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সসম্মানে বাংলাদেশে এসে আপনাদের পাশে দাঁড়িয়ে আপনাদের নেতৃত্ব দিবে।
অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনে শহীদ ৬টি এবং আহত ৬টি পরিবারের স্বজন এবং সদস্যরা উপস্থিত থেকে আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করেন। এ সময় শ্রীপুর পৌর বিএনপি'র সভাপতি প্রয়াত অ্যাডভোকেট কাজী খান এবং সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত শহীদুল্লাহ শহীদের পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি।
অনুষ্ঠানে বিএনপি নির্বাহী কমিটির সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডা: এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চুর সভাপতিত্বে এবং শ্রীপুর পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন বেপারীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি'র নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা: মাজহারুল আলম, তেলিহাটি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু জাফর আহমেদ, কৃষকদল নির্বাহী কমিটির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ রানা, গাজীপুর জেলা যুবদলের যুগ্ন আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম সরকার, গাজীপুর সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের মুসল্লী, সাখাওয়াত হোসেন সবুজসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীবৃন্দ।
রাজু
