
ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ।
কুষ্টিয়ায় আবারও নতুন করে কোভিড-১৯ আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে জেনারেল হাসপাতালে। এরই মধ্যে রাজধানী ঢাকা থেকে আগত দুইজন কোভিড পজিটিভ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে উদ্বেগজনক তথ্য হলো—কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের একমাত্র পিসিআর ল্যাবের সব যন্ত্রপাতি চুরি হয়ে গেছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, এখনই সতর্ক না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। মেডিসিন ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অনেকেই সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। ওয়ার্ডে কর্মরত নার্সরা নিয়মিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন রোগীদের।
জেনারেল হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি ভয়াবহ না হলেও আমরা প্রস্তুত আছি। আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সম্প্রতি দুইজন করোনা পজিটিভ রোগী ভর্তি না হয়ে ফিরে গেছেন, যা থেকে সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এদিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবের যন্ত্রাংশ চুরি যাওয়ার ঘটনায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ১৬ এপ্রিল যাত্রা শুরু করে এই ল্যাব। করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ায় এক বছর আগে ল্যাবটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর দুটি পদে কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে ল্যাব দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়। চার মাস আগে থেকে ধাপে ধাপে যন্ত্রপাতি চুরি হলেও বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানতে পারে এক মাস আগে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. হোসেন ইমাম বলেন, “পিসিআর ল্যাবের সব যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গেছে। বিষয়টি একদিনে হয়নি, ধারণা করা হচ্ছে চার মাস ধরে ধাপে ধাপে চুরি হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারীদের চরম অবহেলা ছিল। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে রিপোর্টও জমা দেওয়া হয়েছে।”
কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের ৮ মার্চ থেকে জেলায় কোভিডে মারা গেছেন ৮৫৫ জন, আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রায় চার হাজার। এর মধ্যে ২০২১ সালের জুলাই মাসে সর্বোচ্চ ৩৪২ জনের মৃত্যু হয়।
সাধারণ মানুষের দাবি, দ্রুত পিসিআর ল্যাব পুনরায় চালু করে সঠিকভাবে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, নতুন করে সংক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, আর এর সঙ্গে চুরি হওয়া যন্ত্রপাতির ঘটনায় জনমনে চরম হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মিরাজ খান