
ছবি: প্রতীকী
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে জনতা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে দা দিয়ে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় স্বামী লতিফ মিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শনিবার (১৪ জুন) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল হাকিম আজাদ।
এর আগে, গত মঙ্গলবার (১০ জুন) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুর মৎস্য খামার গ্রামে (ভাটিকাপাসিয়া কছিম বাজার সংলগ্ন) এ মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহত জনতা বেগম ছাপড়হাটি ইউনিয়নের উত্তর মরুয়াদহ গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের মেয়ে। প্রায় ১১ বছর আগে তার বিয়ে হয় উত্তর শ্রীপুর মৎস্য খামার গ্রামের (ভাটিকাপাসিয়া কছিম বাজার সংলগ্ন) মতলব মিয়ার ছেলে লতিফ মিয়ার সঙ্গে। বিয়ের পর তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে জন্ম নেয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকসহ নানা পারিবারিক বিষয়ে জনতা বেগমকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিলেন স্বামী লতিফ মিয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার পারিবারিকভাবে সালিশ হলেও নির্যাতন বন্ধ হয়নি।
হত্যাকাণ্ডের দিন সকালে ‘তাবিজ’ বের করার নাম করে একটি পরিকল্পিত নাটক সাজিয়ে জনতা বেগমকে ফাঁসাতে চায় লতিফ মিয়া ও তার স্বজনরা। এতে জনতা বেগম প্রতিবাদ করলে স্বামী তাকে কিলঘুষি মারতে থাকেন। ভয়ে তিনি ঘরের মাচার নিচে লুকিয়ে পড়লে সেখান থেকে টেনে বের করে তার হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়।
এরপর লতিফ মিয়া ধারালো দা দিয়ে তার গলার পাশে কোপ দিলে সেখানে গুরুতর জখম হন। রক্তাক্ত অবস্থায় প্রায় এক ঘণ্টা ফেলে রাখার পর আসামিরা তাকে অজ্ঞাতনামা একটি ভ্যানে করে সীচা বাজারের এক পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। চিকিৎসক জনতা বেগমকে মৃত ঘোষণা করলে তার মরদেহ কছিম বাজার কাঠের ব্রিজের উত্তরে ফেলে রেখে সবাই পালিয়ে যায়।
নিহতের বড় ভাই শহিদ মিয়া বাদী হয়ে সুন্দরগঞ্জ থানায় ভুক্তভোগীর স্বামীসহ ১১ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি মো. আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।’
সুদীপ্ত শামীম/রাকিব