ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৩ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

টঙ্গী-গাজীপুর বিআরটি সড়কের জলবদ্ধতার সমাধান চান লাখো ভুক্তভোগী

নূরুল ইসলাম তালুকদার, টঙ্গী।।

প্রকাশিত: ১৭:২৭, ১১ জুন ২০২৫

টঙ্গী-গাজীপুর বিআরটি সড়কের জলবদ্ধতার সমাধান চান লাখো ভুক্তভোগী

ঢাকা–ময়মনসিংহ–টাঙ্গাইল মহাসড়কের টঙ্গী-গাজীপুর অংশে বিআরটি সড়কের ভুল নকশা এবং পানি নিষ্কাশনের অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে মহাসড়ক ও আশপাশের রাস্তাঘাটে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে ওই এলাকার হাজার হাজার বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও পথচারীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

সামান্য বৃষ্টিতেই মহাসড়কে হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি জমে যায়। আশপাশের অলিগলি, ঘরবাড়ি ও রাস্তা পানিতে তলিয়ে যায়। যানবাহনের চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটে—গাড়িতে পানি ঢুকে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়, বিকল গাড়ি সড়কে দাঁড়িয়ে পড়ে, ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। কখনো কখনো প্রাইভেট কার পানিতে ভেসে যাওয়ার মতো অবস্থাও হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা জলাবদ্ধতায় পুরো জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বিআরটি সড়ক নির্মাণের পর থেকেই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। একদিকে সড়ক পারাপারে প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে, অন্যদিকে অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থায় পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় লাখো মানুষ দুর্ভোগে পড়ছেন। তারা অবিলম্বে বিআরটি সড়কের নকশা সংশোধন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়নের দাবি জানান।

সাবেক টঙ্গী পৌরসভার কমিশনার এবং বিএনপি নেতা শেখ মোহাম্মদ আলেক ও সমাজসেবক হাতেম খান মাস্টার জনকণ্ঠকে বলেন, “বিআরটি সড়কের ভুল নকশার ড্রেন দিয়ে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অচল হয়ে গেছে।” তারা জানান, বুধবার তারা নিজেরা ড্রেনের ম্যানহোল পরিষ্কার করেছেন।

ভুক্তভোগীদের মতে, বিআরটি কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়নের অভাবে এই বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এছাড়াও, অপরিকল্পিতভাবে গৃহনির্মাণ, নালা ভরাট ও খাল দখলের কারণেও পানি চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। অতীতে টঙ্গী-গাজীপুরার বাঁশপট্টিতে কয়েকটি আবাসন প্রকল্প খাল ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করায় পশ্চিম পাশের চারটি ওয়ার্ডের পানি পূর্বদিকে সরতে না পেরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। খাল উদ্ধার করলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।

জলাবদ্ধতায় টঙ্গীর চেরাগআলী, কলেজ রোড, বনমালা সড়ক, হোসেন মার্কেট, মোক্তারবাড়ি রোড, লেদু মোল্লা রোড, এরশাদ নগর, মোল্লাবাড়ি রোড, খাপাড়া রোড, গাজীপুরা সাতাইশ রোডসহ তারগাছ, বড়বাড়ি, গাছা, বোর্ড বাজার, সাইনবোর্ড, ছয়দানা, মালেকের বাড়ি, বাসন সড়ক, জয়দেবপুর চৌরাস্তা, চৌধুরীবাড়ি বাইপাস—এসব এলাকাও তলিয়ে গেছে।

এতে যান চলাচল মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় লাখো মানুষের জীবনযাত্রায় অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় সমাধানে কেউ কার্যকর ভূমিকা রাখছেন না।

ঢাকা–ময়মনসিংহ–টাঙ্গাইল মহাসড়কের টঙ্গী-গাজীপুর বিআরটি সড়কের জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান চান যানবাহনের চালক, মালিক এবং এলাকার লাখ লাখ বাসিন্দা।

সজিব

×