
বাউফলের ধানদি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রধান মঞ্জুর মোর্শেদকে সরকারী প্রশিক্ষণের জন্য প্রত্যয় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আকমল হোসেন খানের বিরুদ্ধে।
বিদ্যালয় সূত্র জানান, আইসিটি ব্যবহারের মাধ্যমে শ্রেণিকার্যক্রম পরিচালনায় শিক্ষকদের জ্ঞান, দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে মাধ্যমে মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকদের চার দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণটি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করছে।
কিন্তু নিয়ম বহির্ভূতভাবে বাউফল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সরকারি ওই প্রশিক্ষণে ধানদী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সাময়িক বহিষ্কৃত প্রধান শিক্ষক মো. মঞ্জুর মোরশেদের জন্য প্রত্যায়নপত্র দিয়েছে শিক্ষা অফিসার।
স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান জানান, ২০০৬ সালে ধানদী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মো. মঞ্জুর মোরশেদ প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে। এরপর থেকে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়নের অভিযোগ উঠে। এ নিয়ে গত বছরের ৫সেপ্টেম্বর ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয়রা মানববন্ধন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের(ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
ওই দিন ইউএনও মঞ্জুর মোরশেদকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। তার অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটি ৩০ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে আত্মসাৎ, আর্থিক ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম ও অদক্ষতা, দায়িত্ব পালনে অবহেলা, পেশাগত অসদাচরণসহ ১৭টি বিষয় উঠে আসে। এবং চূড়ান্তভাবে বরখাস্তের সুপারিশ করেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
সেই অনুযায়ী চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভার সীধান্ত অনুযায়ী সভাপতি মুহাম্মাদ শহীদুল ইসলাম চাকুরি থেকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্তের জন্য শিক্ষা বোর্ডের আপিল অ্যান্ড আরবিট্রেশন কমিটির কাছে আবেদন করেন। বোর্ডে নিয়ম অনুযায়ী স্কুল কর্তৃপক্ষ পাঁচ হাজার টাকার ব্যাংক ড্রাফট জমা দেন।
বাউফল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আকমল হোসেন খান বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে পাঠানো তালিকায় মঞ্জুর মোরশেদের নাম রয়েছে। এছাড়া বিধি অনুযায়ী ৬ মাসের মধ্যে সাময়িক বরখাস্তকৃত চূড়ান্ত বরখাস্ত না হলে অটোমেটিক স্বপদে তিনি পূর্ণ বহাল হন। সেই অনুযায়ী মঞ্জুর মোর্শেদ ওই বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে চার দিনের আইসিটি প্রশিক্ষণের নাম সুপারিশ করা হয়েছে।
বরিশাল সরকারি টির্সাস ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর যতীন্দ নাথ সরকার বলেন, মঞ্জুর মোরশেদকে প্রশিক্ষণে অংশ নিতে বাউফল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সুপারিশ করেছেন। সংশ্লিষ্ট উপজেলা কিংবা জেলা শিক্ষা অফিসারের প্রত্যায়নধারীদের প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া থেকে বিরত রাখার এখতিয়ার আমাদের নেই।
তিনি আরো বলেন, সরকারি বিধি অনুযায়ী স্থায়ী কিংবা সাময়িক বহিষ্কার হওয়া শিক্ষক কিংবা সরকারি আধা সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মকর্তা কর্মচারীকে সরকারি সুবিধাপ্রাপ্ত প্রশিক্ষণ, সভা-সেমিনারে পাঠানো যায় না। সাময়িক বহিস্কারকৃত ওই শিক্ষককে প্রশিক্ষণের প্রত্যয় দেওয়া ঠিক হয়নি।
সায়মা