ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩১ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বদলে যাচ্ছে এশিয়ার নিরাপত্তার মানচিত্র

বড় যুদ্ধের ইঙ্গিত! শক্তি বাড়াচ্ছে এশিয়ার দেশগুলো

প্রকাশিত: ০৩:৪৭, ৩০ মে ২০২৫

বড় যুদ্ধের ইঙ্গিত! শক্তি বাড়াচ্ছে এশিয়ার দেশগুলো

ছবিঃ সংগৃহীত

সিঙ্গাপুর থেকে টোকিও, নয়াদিল্লি থেকে হো চি মিন—এশিয়ার আকাশে যেন ঘনাচ্ছে অনিশ্চিত যুদ্ধের ছায়া। আর এই অদৃশ্য হুমকি মোকাবিলায় চলছে রেকর্ড পরিমাণ অস্ত্র কেনা, সামরিক প্রযুক্তি উন্নয়ন ও গবেষণায় বিপুল বিনিয়োগ।

লন্ডনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (IISS) থেকে বুধবার (২৮ মে) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছয়টি দেশ—ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম—প্রতিরক্ষা গবেষণা ও অস্ত্র ক্রয়ে মোট ২.৭ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত খরচ করেছে। এতে এই অঞ্চলের প্রতিরক্ষা ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১০.৫ বিলিয়ন ডলার

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হয়ে উঠছে। ইউক্রেন যুদ্ধের দীর্ঘ ছায়া, মধ্যপ্রাচ্যের টালমাটাল অবস্থা, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং তাইওয়ান ও দক্ষিণ চীন সাগরকে ঘিরে চলমান উত্তেজনা—সব মিলিয়ে গোটা অঞ্চলে তৈরি হয়েছে এক অস্থির ভবিষ্যতের সম্ভাবনা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু শান্তিবার্তা দিয়ে হয়তো ভবিষ্যতের সংঘাত ঠেকানো সম্ভব নয় বলেই দেশগুলো তাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর দিকে ঝুঁকছে। এই বাড়তি ব্যয় শুধু অস্ত্র কেনাতেই সীমাবদ্ধ নয়, উন্নত সামরিক প্রযুক্তিতেও দেশগুলো বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করছে। সাবমেরিন, ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র এবং নজরদারি ও গোয়েন্দা কার্যক্রমে ব্যবহৃত অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির দিকে নজর দিচ্ছে তারা।

ভারত ও রাশিয়ার যৌথভাবে তৈরি ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র ফিলিপাইনকে সরবরাহের বিষয়টি এই প্রবণতাকে আরও স্পষ্ট করে তোলে। এছাড়া প্রযুক্তি হস্তান্তর, যৌথ প্রকল্প ও লাইসেন্সযুক্ত উৎপাদনের মাধ্যমে ইউরোপীয় কোম্পানি ও মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশও এখন এশিয়ার প্রতিরক্ষা বাজারে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত বর্তমানে চীনের Norinco এবং ভারতের Hindustan Aeronautics-এর মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারত্ব গড়ে তুলছে। এই প্রতিরক্ষা খাতে বাড়তি ব্যয়কে অনেকেই দেখছেন ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কৌশল হিসেবে।

যদিও এই প্রতিযোগিতা শেষ পর্যন্ত শান্তির পথ সুগম করবে কিনা, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তবে একথা স্পষ্ট—এশিয়ার দেশগুলো এখন নিজেদের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে সামরিক শক্তি ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা অর্জনে।

সূত্রঃ https://youtu.be/mV82cPBoGk0?si=4cK6oanrQcfil6VH

ইমরান

×