
ছবি: সংগৃহীত
টিউনিশিয়ার উদ্ভাবনী তরুণ উদ্যোক্তা বোচরা বারগাওই মাটি ও পাথরের দেশ থেকে এসে গড়েছেন একটি টেকসই আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড "বোচরা বারগাওই নেপচুন" যেখানে শিশুদের জন্য খেলনা তৈরি হয় নির্মাণস্থলের পরিত্যক্ত মার্বেল দিয়ে।
দুবাইয়ের ইউনিভার্সিটি অব ইউরোপ ফর অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সেস-এ পড়াশোনা করছেন মাত্র ২০ বছরের বোচরা। তাঁর এই উদ্যোগের শুরু হয়েছে মরক্কো সীমান্তঘেঁষা টিউনিশিয়ার ঐতিহ্যবাহী মোজাইক শিল্পকে ঘিরে, যেটি তাঁর শৈশবের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। “শৈশবে আমাদের চারপাশে মোজাইক ছাড়া কিছুই ছিল না দেয়াল, আয়না, টেবিল, চেয়ার, মেঝে সব জায়গায়,” বলেন বোচরা।
শুধু শখ নয়, বরং পরিবেশবান্ধব কিছু করার উদ্দেশ্যে, ১৭ বছর বয়সে তিনি নিজেই ব্যবসা শুরু করেন। শুরুটা টিউনিশিয়ায়, যেখানে তাঁর দলের স্থানীয় কারিগররা নির্মাণ বর্জ্য হিসেবে ফেলে দেওয়া মার্বেলকে পরিণত করেন হাতে তৈরি মোজাইক শিল্পে।
এই পুনর্ব্যবহারযোগ্য শিল্পকর্মগুলোর মধ্যে একটি বিশেষ পণ্য হচ্ছে শিশুদের জন্য মার্বেলের তৈরি পাজল গেম। যেমন একটি পাজলের ডিজাইনে আছে চোখ টিপে থাকা একটি পেঁচা একটি খেলার সাথেই শিক্ষামূলক উদ্ভাবন।
২০২৪ সালে বোচরা দুবাইয়ে এসে অংশ নেন একটি উদ্যোক্তাদের এক্সেলারেশন প্রোগ্রামে, যেখানে তিনি প্রথমে শীর্ষ ৪০, পরে শীর্ষ ১০ এ জায়গা করে নেন। সাত মাসের সেই প্রোগ্রাম তাদের ব্যবসাকে এক নতুন মাত্রা দেয়।
তিনি জানান, “আমরা বিনিয়োগকারী, মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ এবং খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে সংযুক্ত হই। আমাদের একটি পূর্ণাঙ্গ মার্কেটিং কৌশল তৈরি হয় এবং নতুন পণ্যও বাজারে আসে, যেমন ঘর ও মেঝের জন্য সজ্জাসামগ্রী মোজাইক টাইল।”
বর্তমানে বোচরা নেপচুন এর পণ্য পাওয়া যাচ্ছে ইউএই-তে কারেফোর ও যুক্তরাষ্ট্রে বার্নস অ্যান্ড নোবলের মত বড় প্রতিষ্ঠানে। তাঁর দলটি এখন ৪০ জনেরও বেশি কর্মী ও ফ্রিল্যান্সার নিয়ে কাজ করে। মূল টিমটি রয়েছে টিউনিশিয়ায়। “আমাদের ক্যাটালগে রয়েছে ২,০০০টিরও বেশি ডিজাইন, এবং আমরা পরিবেশবান্ধব উপকরণ ব্যবহার করি প্যাকেজিং, এক্সপোর্ট ও ইমপোর্টে,” জানান বোচরা।
আজ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপসহ ২০টি দেশে রয়েছে তাঁদের কার্যক্রম। তবে শুধু ব্যবসায়িক সাফল্য নয়, বোচরার লক্ষ্য একটি ঐতিহ্যকে টেকসই ও যুগোপযোগী করে আগামীর জন্য সংরক্ষণ করা। “আমি মোজাইককে ভালোবাসি, কারণ এটি টিকে থাকে। এটি সহজে ভাঙে না। একটি শিশু যখন এটি পায়, তখনও এটি বহু বছর টিকে থাকে,” বলেন তিনি।
শহীদ