
ছবিঃ সংগৃহীত
আধুনিক বিশ্বের সামরিক ইতিহাসে ‘স্যামসন অপশন’ এক ভয়ংকর কৌশলের প্রতীক। এটি ইসরায়েলের পরমাণু নীতির মূলভিত্তি, যেখানে আত্মঘাতী অবস্থান থেকেও শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত শত্রুকে নিশ্চিহ্ন করার মনোভাব প্রতিফলিত হয়।
এই শব্দটির উৎস হিব্রু বাইবেলের এক ঘটনা। সেখানে বলা হয়েছে স্যামসন নামের এক বীরযোদ্ধার কথা, যিনি ছিলেন অদ্বিতীয় শক্তির অধিকারী। শত্রুরা তাকে বন্দী করে তার চোখ উপড়ে নেয় এবং তাকে বন্দিত্বে রাখে। চূড়ান্ত হতাশার মুহূর্তে স্যামসন এক বিশাল মন্দিরের স্তম্ভ জড়িয়ে ধরে সেটি ধ্বংস করেন। ফলে তিনি নিজে মৃত্যুবরণ করেন, কিন্তু শত্রুদের সঙ্গেও মৃত্যু টেনে আনেন। এই আত্মঘাতী প্রতিশোধ থেকেই ইসরায়েল তাদের পরমাণু কৌশলের নাম দেয় ‘স্যামসন অপশন’।
১৯৬০-এর দশক থেকেই ইসরায়েল গোপনে পরমাণু অস্ত্র তৈরির পথে এগোয়। যখন বিশ্ব সোভিয়েত ইউনিয়ন ও আমেরিকার ঠান্ডা যুদ্ধ নিয়ে ব্যস্ত, তখন ইসরায়েল গোপনে একটি পরমাণু শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তবে তারা কখনও সরাসরি স্বীকার করেনি যে তাদের কাছে পরমাণু অস্ত্র আছে। এ ধরণের কৌশলকে বলা হয় “পারমাণবিক অস্পষ্টতা” — না হ্যাঁ, না না, বরং একটি ধোঁয়াশা রেখে দেওয়া, যাতে শত্রুরা সর্বদা সংশয় ও ভয়ের মধ্যে থাকে।
তবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, ইসরায়েলের কাছে প্রায় ৮০ থেকে ৯০টি পরমাণু বোমা রয়েছে। শুধু বোমাই নয়, এসব ব্যবহারের জন্য রয়েছে উন্নত বাহন ও অবকাঠামো — যেমন দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য অস্ত্র, ও যুদ্ধবিমান থেকে ফেলা সম্ভব বোমা। অর্থাৎ কেউ যদি ইসরায়েলকে ধ্বংস করে দেয়, তবুও তারা সাবমেরিন কিংবা গোপন সামরিক ঘাঁটি থেকে পাল্টা আঘাত হানতে সক্ষম। এই সক্ষমতাকেই সামরিক পরিভাষায় বলা হয় “সেকেন্ড স্ট্রাইক ক্যাপাবিলিটি”।
মুমু