ছবিঃ সংগৃহীত
বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর ও রহস্যময় গোয়েন্দা সংস্থা হিসেবে পরিচিত চীনের মিনিস্ট্রি অফ স্টেট সিকিউরিটি (MSS) বা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই এই সংস্থার গোপন প্রতিনিধিত্ব রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি প্রতিবেদনে এমএসএস-এর ভয়াবহ গুপ্তচর কার্যক্রমের চিত্র উঠে এসেছে, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম সিবিসি নিউজ-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, চীন বিশ্বব্যাপী নিজেদের গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বৈশ্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং বিভিন্ন ঘটনায় নিজেদের প্রভাব বিস্তার করছে। এমনকি পশ্চিমা দেশগুলোতে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী চীনা নাগরিকদের উপর নজরদারি ও প্রভাব বিস্তার চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গুপ্তচর সংখ্যার দিক থেকে চীনের এমএসএস বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ ও তৎপর গোয়েন্দা সংস্থা। একাধিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, এমএসএস এখন বিশ্বের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা, স্থানীয় সরকারসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিজেদের গুপ্তচর নিযুক্ত করছে, যা পশ্চিমা নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য বড় হুমকি হিসেবে বিবেচিত।
চীনের এই গোয়েন্দা সংস্থাটি কেবল আন্তর্জাতিক তথ্য সংগ্রহই নয়, অর্থনৈতিক গুপ্তচরবৃত্তি, কৌশলগত গোয়েন্দা তৎপরতা, সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান এবং বিদেশে বসবাসকারী ভিন্নমতাবলম্বীদের টার্গেট করার কাজেও ব্যাপকভাবে সক্রিয়। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এমএসএস-এর এই তৎপরতা বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি তৈরি করছে।
চীনে আলাদা কোনো আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থা নেই, বরং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় (MSS)-ই দেশের সব ধরনের গোয়েন্দা তৎপরতা পরিচালনা করে থাকে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ১৯৮৩ সালে সেন্ট্রাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট-কে এমএসএস-এর অধীনে আনা হয় এবং এরপর থেকেই এই সংস্থাটি চীনের প্রধান কৌশলগত গোয়েন্দা সংস্থা হিসেবে কাজ করছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রতিবেদন শুধু চীনের নয়, বরং আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা যুদ্ধের জটিল বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ হুমকির আগাম বার্তা বহন করে। যেখানে মার্কিন সিআইএ দ্বিতীয়, সেখানে এমএসএস-এর শীর্ষে থাকা গোটা বিশ্বকেই ভাবিয়ে তুলেছে।
ইমরান
