ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩১ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আকাশগঙ্গায় রহস্যময় নতুন বস্তু আবিষ্কার, নির্গত হচ্ছে এক্স-রে ও রেডিও তরঙ্গ

প্রকাশিত: ০৩:২৯, ৩০ মে ২০২৫; আপডেট: ০৩:৩০, ৩০ মে ২০২৫

আকাশগঙ্গায় রহস্যময় নতুন বস্তু আবিষ্কার, নির্গত হচ্ছে এক্স-রে ও রেডিও তরঙ্গ

ছবি: সংগৃহীত

আকাশগঙ্গা গ্যালাক্সিতে এক রহস্যময় মহাজাগতিক বস্তুর সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, যা নিয়মিতভাবে একসঙ্গে এক্স-রে ও রেডিও তরঙ্গ নির্গত করছে—এই ধরণের ঘটনা বিজ্ঞানীদের কাছে সম্পূর্ণ নতুন।

একটি আন্তর্জাতিক গবেষক দল জানিয়েছে, এই বস্তুটি হতে পারে একটি মৃত তারা, একজোড়া তারা, বা এমন কিছু যা এখনো বিজ্ঞানের গণ্ডিতে সম্পূর্ণ চিহ্নিত নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় প্রতি ৪৪ মিনিট পরপর এটি একবার করে এক্স-রে ও রেডিও তরঙ্গ ছাড়ে—বিশেষ করে এর অতিমাত্রায় সক্রিয় অবস্থায়।

অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও গবেষণা দলের প্রধান জিতেং অ্যান্ডি ওয়াং জানান, এটি হতে পারে একটি অতি-চৌম্বকীয় নিউট্রন তারা বা হোয়াইট ডোয়ার্ফ, অর্থাৎ একটি মৃত তারা। তবে এটিকে ‘অজানা ও এক্সোটিক’ কিছু বলার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি।

এই রহস্যময় বস্তুর অবস্থান পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫ হাজার আলোকবর্ষ দূরে, আমাদের গ্যালাক্সির একটি তারকা, গ্যাস ও ধুলায় ভরপুর অঞ্চলে। নাসার ‘চন্দ্র এক্স-রে টেলিস্কোপ’ ২০২৩ সালে একটি সুপারনোভা বিস্ফোরণের ধ্বংসাবশেষ পর্যবেক্ষণের সময় ঘটনাক্রমে এই বস্তু থেকে নির্গত এক্স-রে শনাক্ত করে।

গবেষণা অনুযায়ী, এই বস্তুটির ‘হাইপারঅ্যাকটিভ’ (অত্যন্ত সক্রিয়) পর্যায় স্থায়ী ছিল প্রায় এক মাস। সেই সময়ের বাইরে বস্তুটি আর কোনো উল্লেখযোগ্য এক্স-রে বিকিরণ করেনি। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এরকম আরও অনেক বস্তু মহাকাশে লুকিয়ে থাকতে পারে যা এখনো ধরা পড়েনি।

বস্তুটির আনুষ্ঠানিক নাম দেওয়া হয়েছে ASKAP J1832−091। তবে এটি উক্ত সুপারনোভা ধ্বংসাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত কি না, সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি গবেষকরা, কারণ দূরত্ব এখনো সুস্পষ্টভাবে নির্ধারিত নয়।

গবেষক অ্যান্ডি ওয়াং বলেন, ‘আমাদের এই আবিষ্কার এখনো এই বস্তুর প্রকৃতি ব্যাখ্যা করতে পারেনি—বরং রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে। তবে এটা নিশ্চিতভাবে বোঝাচ্ছে, হয় আমরা সম্পূর্ণ নতুন কোনো জিনিস আবিষ্কার করছি, অথবা পরিচিত কোনো মহাজাগতিক বস্তুর এমন এক রূপ দেখছি, যা আগে কখনো দেখা যায়নি।’

উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে মহাকাশে উৎক্ষেপণকৃত নাসার চন্দ্র এক্স-রে টেলিস্কোপ এখনো পৃথিবীর কক্ষপথে থেকে মহাবিশ্বের সর্বোচ্চ শক্তিশালী ও উচ্চ-তাপমাত্রার বস্তুগুলো পর্যবেক্ষণ করে চলেছে।

 

সূত্র: এপি।

রাকিব

×