
সাগরের বুক চিরে তোলা স্থাপনায় এখন ভর করেছে জোয়ারের আতঙ্ক। কুয়াকাটার শূন্য পয়েন্টের পশ্চিমে সাগরের পানি ঘেঁষে তৈরি সরদার মার্কেট নামের স্থাপনাটি আজ বুধবারের অস্বাভাবিক জোয়ারে ভাঙনের মুখে। পর্যটক ও দোকানিদের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক। স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, এটা শুধু পরিবেশ নয়, প্রাণহানিরও বড় ঝুঁকি।
দুইতলা বিশিষ্ট এই মার্কেটটি কাঠ ও টিনের উপর ইট-সিমেন্টের ঢালাই দিয়ে তৈরি করা। নিচে রয়েছে অন্তত ৩০টি দোকান। প্রতিদিনই পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে। বুধবার দুপুরে অস্বাভাবিক জলোচ্ছ্বাসে পানির তোড়ে মার্কেটের নিচে থাকা বালুর বস্তা দিয়ে রক্ষা প্রচেষ্টা দেখা যায়। দোকানিরা বলছেন, বর্ষায় জোয়ারের পানি প্রচণ্ড বেগে ধাক্কা দেয়, ভীতিতে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হয়।
পর্যটক ও স্থানীয়দের প্রশ্ন, “সাগরের ভেতরে ব্যক্তিমালিকানা কিভাবে সম্ভব?” এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, মার্কেটের মালিক হিরু মিয়া দাবী করছেন, এই জমি তার রেকর্ডীয় সম্পত্তি। তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সাথে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে এবং প্রকৌশলীর পরামর্শ নিয়েই তিনি মার্কেট তৈরি করেছেন। তাঁর ভাষ্য, “আমরাও বুঝতে পারি নাই এভাবে সাগরের ভেতর সব বিলীন হয়ে যাবে।”
কিন্তু প্রশাসনের অবস্থান স্পষ্ট। কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসীন সাদেক বলেন, “সৈকতের মালিক সরকার। এখানে ব্যক্তিমালিকানার কোনো সুযোগ নেই। পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম জানান, “সৈকতের জমি নিয়ে আদালতের একটি নির্দেশনা রয়েছে। আমরা তৎপর আছিসৈকতের ভেতরে কোনও স্থাপনা গড়ে উঠতে দেওয়া হবে না।”
সচেতন মহল বলছে, এই ধরনের দখলদারিত্ব কেবল পরিবেশ ধ্বংস নয়, পর্যটন নিরাপত্তারও বড় হুমকি। এখনই ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনাও ঘটতে পারে।
মিমিয়া