ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩১ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জমি বিরোধের জেরে বোনকে মারধর, অভিযুক্ত মাদকাসক্ত ছোট ভাই

মোস্তাক আহমেদ বাবু, পীরগাছা ,রংপুর

প্রকাশিত: ১৮:৪৬, ২৭ মে ২০২৫; আপডেট: ১৮:৪৭, ২৭ মে ২০২৫

জমি বিরোধের জেরে বোনকে মারধর, অভিযুক্ত মাদকাসক্ত ছোট ভাই

দৈনিক জনকণ্ঠ

রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পশ্চিম তালুক-ইসাদ খামার বাড়ি এলাকায় মাদকাসক্ত ছোট ভাইয়ের হাতে বড় বোন মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

মঙ্গলবার (২৭ মে) পীরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পশ্চিম তালুক-ইসাদ খামার বাড়ি এলাকার মৃত আহাদ আলির ছেলে শামসুল আলম (৩৫) ও তার বড় বোন মোছা. মল্লিকা লতা (৪৫) একই বাড়িতে বসবাস করতেন। দীর্ঘ সাত মাস ধারে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল তাদের মধ্যে।

গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এ বিরোধের জেরে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শামসুল আলম একটি বাঁশের লাঠি দিয়ে বড় বোনকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এতে গুরুতর আহত হয়ে মল্লিকা লতা মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

স্থানীয় বাসিন্দা ও মল্লিকার বড় বোন জোহরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

পীরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, আহত মল্লিকার মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছে এবং প্রায় ১২টি সেলাই দিতে হয়েছে। বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত হলেও এখনও পুরোপুরি সুস্থ নন।

মল্লিকা লতা অভিযোগ করে জানান, তার ছোট ভাই শামসুল আলম ছাড়াও ওই এলাকার মোজাহার আলির ছেলে মো. জিয়ারুল ইসলাম এবং একই এলাকার আব্দুল কাদেরের ছেলে মনশেব মিয়া এই হামলার পেছনে ইন্ধন দিয়েছেন। এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, এই তিনজন দীর্ঘদিন ধরে মাদক সেবন ও বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত।

অভিযুক্ত শামছুল আলম জানান, আমি কোন প্রকার মারপিট করিনি,শুধু কথা কাটাকাটি হয়েছে,তিনি আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন থানায়। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, শামসুল আলম প্রায়ই মাদকাসক্ত অবস্থায় বড় বোন ও তার স্বামীকে গালিগালাজ করতেন, এমনকি স্ত্রীকেও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন। তার অত্যাচারে সবসময় আতঙ্কে থাকতেন মল্লিকা লতা, যিনি স্বামীহীন এবং বাড়িতে একা থাকেন। তার দুই মেয়ে গার্মেন্টসে চাকরি করেন।

স্থানীয়রা আরও জানান, ঘটনার আগের দিন (বৃহস্পতিবার) মল্লিকার বাড়িতে পুরোনো মামলার তদন্ত করতে এসেছিলেন পীরগাছা থানার এএসআই মো. শাহিন মিয়া। তদন্ত শেষে পুলিশ চলে যাওয়ার পরদিনই এ হামলার ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী পরিবার ও আশপাশের প্রতিবেশীরা মাদকাসক্ত শামসুল আলম ও তার সহযোগী দুই মাদক সেবনকারী ও ব্যবসায়ীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তারা জানান, দীর্ঘদিন ধারে শামসুল আলমের কারণে পরিবারটি চরম মানসিক ও সামাজিক যন্ত্রণার মধ্যে রয়েছে।

পীরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন,অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত তদন্তের করে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

হ্যাপী

×