ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভিজিএফের কার্ড নিয়ে দ্বন্দ্বে বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষ, শিবির সভাপতিসহ আহত ৭

জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি:

প্রকাশিত: ১১:৪৬, ২৬ মে ২০২৫; আপডেট: ১১:৪৭, ২৬ মে ২০২৫

ভিজিএফের কার্ড নিয়ে দ্বন্দ্বে বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষ, শিবির সভাপতিসহ আহত ৭

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে ভিজিএফের কার্ড বিতরণ নিয়ে দ্বন্দ্বে বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে ছাত্রশিবিরের সভাপতিসহ ৭ জন আহত হয়েছেন।
রোববার উপজেলার আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন ছাত্রশিবিরের ক্ষেতলাল উপজেলা সভাপতি মোহাম্মদ আলী (২৫) ও আলমপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জুয়েল ফকির (৪৫)। আহত অন্যরা হলেন রাজু (২৫), মাসুদ (৩৭), ছাব্বির হোসেন (১৮), শিহাব (১৮) ও আবু কাশেম (৪৭)। তাঁদের দলীয় পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ হাজার ৫১২টি বিশেষ ভিজিএফ কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে বিতরণের জন্য বিএনপি, জামায়াত ও ছাত্রনেতাদের কিছু কার্ড দেওয়া হয়। বাকি কার্ড বিতরণের জন্য ইউপি সদস্যদের দেওয়া হয়।

৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুল মতিন মারা যাওয়ায় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আম্মাদ হোসেনকে ওই ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৫০ জন সুবিধাভোগীর তালিকা করে ইউনিয়ন পরিষদে জমা দেন। ভিজিএফের সুবিধাভোগীদের ওই তালিকা সঠিকভাবে করা হয়নি বলে অভিযোগ তোলেন জামায়াতের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
এ বিষয়ে তাঁরা রোববার সকালে ইউপি কার্যালয়ে এসে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোছা. হোসনে আরার সঙ্গে কথা বলেন। এ নিয়ে ইউপি কার্যালয়ের বাইরে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ৭ জন আহত হন।

ছাত্রশিবিরের নেতা মোহাম্মদ আলীকে গুরুতর আহত অবস্থায় বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।

ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান মোছা. হোসনে আরা বলেন, ঈদুল আজহার জন্য ১ হাজার ৫১২টি বিশেষ ভিজিএফের কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়। তাঁরা স্থানীয় প্রশাসনের পরামর্শে কিছু কার্ড বিএনপি, জামায়াত ও ছাত্রনেতাদের নিয়ে সমন্বয় করেছেন। তিনি বলেন, রোববার জামায়াতের লোকজন ইউপি কার্যালয়ে এসে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে সঠিকভাবে কার্ড বিতরণ হয়নি বলে দাবি করেন। তাঁরা বিতরণের জন্য কার্ড দাবি করেন। এরপর ইউপি কার্যালয়ের বাইরে বিএনপি ও জামায়াতের লোকজনের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি শুনেছেন।

ক্ষেতলাল উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি শামীম হোসাইন বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে ইউপি কার্যালয় থেকে বাইরে আসার পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমাদের ভাইদের আহত করেন।’

অন্যদিকে উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদুল মাসুদ আঞ্জুমান বলেন, একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। আমরা উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।

ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আলমপুর ইউনিয়নে ভিজিএফের কার্ড বিতরণ নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মধ্যে হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পায়নি। এ ঘটনায় কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি।

আফরোজা

×