
ছবি: সংগৃহীত
গাজা উপত্যকার কেন্দ্রস্থলে দেইর আল-বালাহর একটি তাঁবু থেকে সকালবেলায় যাত্রা শুরু করেন জেহাদ আল-আসসার। তার গন্তব্য দক্ষিণ গাজার রাফায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (GHF)’ পরিচালিত একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র।
জেহাদের এই ১০ কিলোমিটারের দীর্ঘপথের পেছনে ছিল একটিই তাগিদ—গর্ভবতী স্ত্রী ও দু’টি ক্ষুধার্ত মেয়ের মুখে খাবার তুলে দেওয়া।
একদিকে ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি অবরোধে গাজায় খাদ্যসঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছে, অন্যদিকে বিতর্কিত ‘GHF’ নিজেদেরই মানবিক নীতিমালার বাস্তবায়নে ব্যর্থ। এমন পরিস্থিতিতে এ কেন্দ্রই ছিল জেহাদের শেষ আশ্রয়।
জেহাদ জানান, সকাল থেকে রাফার ত্রাণকেন্দ্রে ভিড় করছিল হাজার হাজার মানুষ। লোহার গেট হঠাৎ খুলে যেতেই শুরু হয় ভীষণ হুড়োহুড়ি। “পুরোটা ছিল বিশৃঙ্খলা, জীবন-মৃত্যুর লড়াই। নারী, শিশু, বৃদ্ধ—সবাই শুধু খাদ্যের জন্য ছুটছিল।”
জেহাদ আরও বলেন, “কেউ দুইটা বাক্স নিতে পারলে সেটাই নিত। আমি শুধু কিছু টুনা, একটু চিনি, কিছু পাস্তা আর বিস্কুট কুড়িয়ে নিতে পেরেছি। এরপর ভিড়ের চাপে আর থাকতে পারিনি।”
এই সামান্য খাবার নিয়েই ঘণ্টাখানেক পায়ে হেঁটে ফিরেছেন জেহাদ। বাড়ি ফেরার পর ছোট মেয়েরা আনন্দে লাফিয়ে উঠেছে—“আমার স্ত্রী আর আমি খাবার ভাগ করে দেই, যাতে মেয়েরা অন্তত খেতে পারে। আমরা না খেয়ে থাকলেও ওদের মুখে খাবার তুলে দিই।”
GHF-এর বিতরণ ব্যবস্থাপনা এতটাই দুর্বল ছিল যে মঙ্গলবার (২৭ মে) এই কেন্দ্রেই পদদলিত হয়ে অন্তত ৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সংস্থাটির প্রধান রোববার পদত্যাগ করেন—তাঁর ভাষায়, “GHF মানবিকতা, নিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতার নীতিতে ব্যর্থ হয়েছে।”
জেহাদ বলেন, “সশস্ত্র বিদেশি সেনারা সবকিছু দেখছিল, কিন্তু কিছুই করছিল না। আমি তাদের বলেছি—তোমরা উপকার করতে আসো নি, এসেছো অপমান করতে।“
মুমু