ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০১ জুন ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

RAW -এর ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশি রাজনৈতিক নেতা হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে যা জানালেন ইলিয়াস

প্রকাশিত: ২৩:২৭, ৩০ মে ২০২৫; আপডেট: ২৩:৩৬, ৩০ মে ২০২৫

RAW -এর ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশি রাজনৈতিক নেতা হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে যা জানালেন ইলিয়াস

ছ‌বি: সংগৃহীত

প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন এক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, নির্বাচন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের হত্যায় RWA মিশনসহ নানা ইস্যুতে উত্তপ্ত একটি সপ্তাহ!

একটি ইউটিউবভিত্তিক নিউজ চ্যানেলের ভিডিও লিংক শেয়ার করে তিনি এসব লিখেছেন। সেই ভিডিওতে জানা যায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি বিশেষ অভিযানে কুষ্টিয়া জেলা থেকে চাঞ্চল্যকর শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোল্লা মাসুদ ওরফে আবু রাসেল মাসুদসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত এই অভিযানে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকেও তাদের আরও দুই সহযোগী শুটার আরাফাত ও শরীফকে আটক করা হয়।

অভিযানে সেনাবাহিনী পাঁচটি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩ রাউন্ড গুলি এবং একটি স্যাটেলাইট ফোন উদ্ধার করে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের একাধিক মামলা রয়েছে। সুব্রত ও মাসুদ ছিল ২৩ জন তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীর অন্যতম এবং 'সেভেন স্টার' নামে পরিচিত একটি সন্ত্রাসী দলের নেতা। জানা গেছে, তাদের মূল পরিকল্পনা ছিল রাজনীতিকদের টার্গেট করে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুব্রত বাইন স্বীকার করেছে, তাদের হত্যার মূল টার্গেট ছিলেন বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি'র শীর্ষ নেতারা। তাদের পরিকল্পনায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের কিছু নিষিদ্ধ নেতার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে দাবি করা হয়েছে। অভিযোগ আছে, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা RAW-এর প্রশ্রয়ে এ ধরনের পরিকল্পনা হয়েছিল, যাতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভাজন তৈরি করে আওয়ামী লীগকে সুবিধাজনক অবস্থানে রাখা যায়।

এদিকে দেশের রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ ছড়িয়েছে নির্বাচন ঘিরে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস জাপানে “নিকেই ফোরাম: ফিউচার অব এশিয়া”-তে জানিয়েছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বর ২০২৫ বা সর্বোচ্চ ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে পারে। অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে তিনটি লক্ষ্য সামনে রেখে— গঠনমূলক সংস্কার, গণঅভ্যুত্থানে জড়িতদের বিচার এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন।

বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের দাবি জানিয়ে দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছে। বিএনপির সিনিয়র নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারিখ না দিলে তারা নিজেরাই ঘোষণা দেবেন। ছাত্রদলও কর্মসূচি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। অপরদিকে, জামায়াত ও এনসিপিও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে সংস্কারের দৃশ্যমান অগ্রগতি এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের রূপরেখা দাবি করেছে।

এনসিপি দাবি করেছে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে অনুষ্ঠিত সব নির্বাচন অবৈধ ঘোষণা করতে হবে। এমন প্রেক্ষাপটে “জাতীয় ঐক্য ও সংহতি পরিষদ” একটি প্রস্তাবে ড. ইউনুসকে রাষ্ট্রপতি এবং তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করার আহ্বান জানায়, যেখানে উপ-রাষ্ট্রপতি ও উপ-প্রধানমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবীদের অংশগ্রহণে একটি আনুপাতিক কাঠামোর প্রস্তাবও রাখা হয়। এই প্রস্তাব ঘিরে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, রাজনৈতিক সংস্কার সম্পন্ন করে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। তিনি বলেন, নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক বিজয়ের সুযোগ এবং এটি জনগণের জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করবে।

সব মিলিয়ে দেশের রাজনীতি, নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক অঙ্গনে এক জটিল ও উত্তপ্ত সময় পার করছে বাংলাদেশ।


ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/watch?v=K_CuQiFejKQ

এম.কে.

×