
.
আজ ৩ জিলহজ। কোরবানি শব্দটির সরল অর্থ হলো ত্যাগ, উৎসর্গ, নৈকট্য ইত্যাদি। শব্দটি ইসলামী পরিভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আল্লাহর আনুগত্যের নিদর্শনস্বরূপ নির্ধারিত সময়ে বিশেষ জাতের পশু উৎসর্গ করাকে ইসলাম ধর্মে কোরবানি বলা হয়। হাদিসের বর্ণনা মতে চন্দ্র বছরের দ্বাদশ মাস জিলহজের দশম তারিখে কোরবানি করা উত্তম। তবে রাতের বেলা জবেহ করা মাকরূহ। একইভাবে ঈদের নামাজের পূর্বে কোরবানির পশু জবেহ করা আইনসিদ্ধ নয়। - (আলমগীরী)।
কোরবানি দানের বাধ্যবাধকতা ॥ জিলহজ মাসের ১০, ১১ এবং ১২ তারিখে কোনো ব্যক্তি যদি নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যবহার্য দ্রব্যাদি ব্যতীত সাড়ে সাত ভরি পরিমাণ স্বর্ণ অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপা অথবা তৎসম মূল্যের অন্যান্য দ্রব্যাদির মালিক হন তার ওপর কোরবানি দেওয়া ওয়াজিব। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) বলেছেন : কোরবানির সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি কোরবানি করে না সে যেন আমাদের ঈদের ময়দানে না আসে।’
পশুর আকৃতি ॥ গরু, মহিষ, উট , ভেড়া, ছাগল ও দুম্বা - এসব জন্তু দ্বারা কোরবানি করা যায়। অন্য কোনো পশু অনুমোদিত নয়। একটি ভেড়া, ছাগল ও দুম্বা দ্বারা কেবল একজনের কোরবানি চলে। গরু, মহিষ ও উট দ্বারা সাতজনের শরিক কোরবানি আইনসিদ্ধ। - (আলমগীরী)। কোরবানির জন্য গরু, মহিষ দুবছরের, উট পাঁচ বছরের এবং ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা এক বছর বয়সী হতে হবে। অবশ্য খুবই মোটা তাজা হলে এক বছরের কম বয়সী ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা দ্বারাও কুরবানি দেওয়া যায়।- (দুররে মানসুর)।
পশুর অযোগ্যতা ॥ ১. অন্ধত্ব, একচোখা, একÑতৃতীয়াংশ দৃষ্টিহীনতা। ২.কান কিংবা লেজ এক - তৃতীয়াংশ কাটা। ৩. কোনো একটি পা অচল। ৪. গোড়া দিয়ে শিং ভেঙে যাওয়া। ৫. ক্ষীণকায় এবং হাড়মজ্জাহীন হওয়া। এসব কারণে যে কোনো পশু কোরবানির জন্য অযোগ্য হয়ে যায়। (শামী, আলমগীরী)।
কুরবানির মাংস ॥ তিনভাগ করে একভাগ নিজেদের জন্য রাখা, একভাগ দরিদ্র ও নিঃস্বদের মাঝে বিলিয়ে দেওয়া আর একভাগ আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে বণ্টন করা উত্তম। - (শামী)। এখন কিন্তু আমরা তা করি না। আমরা ভালভাল গোশ্তগুলো প্রথমেই উঠান থেকে ঘরে তুলে ফেলি। তার পর ফ্রিজে রেখে দেই। আগামী ছয় মাস গোশ্ত না কেনার জন্য। টিক্কা কিংবা কাবাব বানিয়ে খাওয়ার জন্য। আর যে সব গোশ্ত হাড্ডি সংরক্ষণ অযোগ্য সেগুলোকে দরজায় কোনো ভিক্ষুক এলে তাদের কিছু কিছু দিয়ে বিদায় করি।
প্যানেল