ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৬ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সংবাদ সম্মেলনে নারীর অভিযোগ

ডিএনএ প্রমাণেও সন্তানের পিতা মানছেন না মোকাদ্দেস হানিফ

প্রকাশিত: ১৯:৩১, ২৫ মে ২০২৫

ডিএনএ প্রমাণেও সন্তানের পিতা মানছেন না মোকাদ্দেস হানিফ

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর আদাবরের এএনএইচ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোকাদ্দেস হানিফ টলিনের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির এক নারী সাবেক সহকর্মী মবিনা জান্নাত ধর্ষণ, সন্তান জন্মের পর পিতৃত্ব অস্বীকার এবং মামলা প্রত্যাহারে চাপ সৃষ্টি ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ তুলেছেন।

রবিবার (২৫ মে) রাজধানীর ইস্কাটনের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তোলেন ভুক্তভোগী মবিনা জান্নাত।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ২০১৭ সালে পারিবারিকভাবে খোরশেদ আলম রোমেল নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কারণে ২০২০ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। এরপর তিনি এএনএইচ গ্রুপে চাকরিতে যোগ দেন। ওই সময় প্রতিষ্ঠানটির এমডি মোকাদ্দেস হানিফ তার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে প্রথমে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করেন। পরবর্তীতে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটান।

মবিনা জানান, ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে তিনি গর্ভবতী হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। কিন্তু মোকাদ্দেস হানিফ বিষয়টি গোপন রাখতে বলেন এবং সন্তানের দায়িত্ব নিতে গড়িমসি করেন। পরবর্তীতে সন্তানের সামাজিক স্বীকৃতি ও আইনি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, মোকাদ্দেসই শিশুটির জৈবিক পিতা।

ডিএনএ প্রমাণের পরও মোকাদ্দেস হানিফ সন্তানের পিতৃত্ব স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানান। বরং রাজনৈতিক প্রভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এমনকি একটি সংস্থার মাধ্যমে তাকে তুলে নেওয়ার পরিকল্পনাও করেন বলে অভিযোগ করেন মবিনা।

তিনি আরও বলেন, মামলার পর মোকাদ্দেস হানিফের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর আত্মসমর্পণের পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগারে দেখা করতে গেলে হানিফ তাকে দেশ ছাড়ার প্রস্তাব দেন এবং হুমকি দেন— না গেলে কিছুই পাবে না। ২০২৪ সালের ৫ মে তিনি জামিনে মুক্তি পান। এরপর থেকেই মবিনা জান্নাতকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে এবং প্রাণনাশের চেষ্টা চলছে।

মবিনা জানান, তার আড়াই বছর বয়সী কন্যা শিশুটি জন্ম থেকেই হৃদরোগে আক্রান্ত (হার্টে ছিদ্র)। বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে, কিন্তু আর্থিক সংকটে তা সম্ভব হচ্ছে না। সন্তানের চিকিৎসায় হানিফ কোনো সহায়তা করছেন না। বরং তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করতে টাকা খরচ করে বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করছেন। এমনকি তার স্ত্রীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি মহল তাকে হত্যার চেষ্টা করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এএনএইচ গ্রুপের এমডি মোকাদ্দেস হানিফ টলিন বলেন, “এই সন্তান আমার। বিষয়টি পরবর্তীতে সুরাহা করব।” এরপর তিনি ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। 

আসিফ

×