
ছবি: সংগৃহীত
ময়মনসিংহের ত্রিশালে শুকনি বিলের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বটগাছটি ঘিরেই গড়ে ওঠে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। কিশোর নজরুল এই গাছের নিচে বসেই বাঁশি বাজাতেন। সেই স্মৃতিকে কেন্দ্র করেই ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় দেশের একমাত্র নজরুল-নামকরণে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।
কিন্তু যে গাছটিকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম, সেই নজরুল-বটবৃক্ষ আজ বিশ্ববিদ্যালয় সীমানার বাইরে পড়ে আছে অযত্ন-অবহেলায়। প্রশাসনের নির্মিত সীমানাপ্রাচীরের আড়ালে এখন গাছটি চাপা পড়ে রয়েছে। গাছের নিচে গড়ে উঠেছে চায়ের দোকান আর টং দোকান—নেই কোনো সংরক্ষণ বা নজরদারি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৫ সালের ১ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কবির স্মৃতিবিজড়িত বটগাছের পাশেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরবর্তীতে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বটগাছ ও ভিত্তিপ্রস্তরটি গুরুত্বহীন করে তোলা হয়। সর্বশেষ ২০২১ সালে নির্মিত সীমানাপ্রাচীরের ফলে গাছটি পড়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও নজরুলপ্রেমীরা। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী কৌশিক আহমেদ শোভন বলেন, “হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন হলেও নজরুলের স্মৃতিধন্য এই গাছটি অবহেলায় পড়ে আছে, যা কবির স্মৃতির অবমাননা।”
নজরুল গবেষক ও ইনস্টিটিউট অব নজরুল স্টাডিজের উপ-পরিচালক রাশেদুল আনাম বলেন, “নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত অনেক স্থান পরিবর্তিত হলেও বটগাছটি এখনো জীবন্ত কিংবদন্তি হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত এটিকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ডা. মো. মাহবুবুর রহমান লিটন বলেন, “বিগত প্রশাসন সুপরিকল্পিতভাবে বটগাছটিকে বাইরে রেখেই সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করেছে। তবে নতুন পরিকল্পনায় ১০০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে, তখন গাছটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে আনা হবে।”
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, “বটগাছের জায়গাটি ব্যক্তিমালিকানাধীন হলেও আমরা তা অধিগ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে আনার উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি শিগগিরই সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।”
আসিফ