ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ফুলবাড়ীতে কালভার্ট ধসে পড়ায় যাতায়াতে ভোগান্তি

মাহফুজার রহমান মাহফুজ, ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম

প্রকাশিত: ১৫:০৭, ২৪ মে ২০২৫

ফুলবাড়ীতে কালভার্ট ধসে পড়ায় যাতায়াতে ভোগান্তি

ছবি : জনকণ্ঠ

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে নির্মাণের কিছুদিন না যেতেই ধসে পড়ে একটি কালভার্ট। এরপর বিধ্বস্ত কালভার্টের ওপর বাঁশের চরাট (সাঁকো) দেওয়া হলেও সেটিও ভেঙে গেছে। ফলে যাতায়াতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন উপজেলা সদর ইউনিয়নের কুটিচন্দ্রখানা গ্রামের হাজারো বাসিন্দা।

স্থানীয় এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা পরিষদের বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপি) আওতায় ২০২১-২২ অর্থবছরে কুটিচন্দ্রখানা গ্রামের আজিজ জোলের ওপর ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা (প্রাক্কলিত মূল্য) ব্যয়ে তিন দশমিক পাঁচ মিটার দৈর্ঘ্য ও তিন মিটার প্রস্থের একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। কালভার্টের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করে কুড়িগ্রাম সদরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স অপু ট্রেডার্স। নির্মাণের কিছুদিন পরেই এটি ধসে পড়ে। 

কালভার্ট নির্মাণ তদারকির দায়িত্বে থাকা তৎকালীন এলজিইডি উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহিদ হাসান জানান, “কালভার্ট নির্মাণে কোনো গাফিলতি ছিল না। স্বল্প বরাদ্দে যেভাবে নির্মাণের কথা ছিল ঠিকাদার সেভাবেই কাজ করেছেন। ভারী বৃষ্টি ও তীব্র স্রোতের কারণে কালভার্টের দু’পাশের মাটি সরে গিয়ে এটি ধসে পড়ে।”

কালভার্টটি ধসে পড়ার পর কেটে গেছে দুই বছর। এতদিনেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

জেলেপাড়ার মো. নুরু মিয়া বলেন, “কালভার্ট ধসে যাওয়ায় দক্ষিণ জেলেপাড়া, দাসিয়ারছড়া, কুমারপাড়া, ভাটিয়াটারি, হাবিবপুর, সেনপাড়া—এইসব এলাকার হাজারো মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।”

তিনি আরও বলেন, “এখানে আগে বাঁশের সাঁকো ছিল, যা দিয়েও চলাচলে কষ্ট হতো। পরে যখন কালভার্ট নির্মাণের কাজ শুরু হয়, আমরা অনেক খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতেই তা ভেঙে যায়।”

স্থানীয় বিউটি বেগম ও জেলাখা বেগম বলেন, “ভাঙা কালভার্টের ওপর যে বাঁশের চরাট দেওয়া হয়েছিল, সেটাও ভেঙে গেছে। এখন কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না। দুই বছর ধরে আমাদের চলাচলের কী যে কষ্ট—আমাদের কষ্ট দেখার কি কেউ নেই?”

সেনপাড়া গ্রামের মন্টু চন্দ্র বলেন, “আমরা গ্রামবাসী এই সড়ক দিয়ে হাটবাজারে যেতাম। আমাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুল-কলেজে যেত। এখন অন্য সড়ক দিয়ে অনেকটা পথ ঘুরে যেতে হয়। দায়সারা কাজের কারণে কালভার্ট ভেঙে গেছে। এখন আর কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না।”

স্থানীয়রা ভেঙে পড়া কালভার্টের ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে ওই স্থানে একটি মজবুত ও টেকসই সেতু বা কালভার্ট নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, “কালভার্ট ধসে পড়ার পর মানুষের যাতায়াতে ভোগান্তি হয়েছে। আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে সেখানে একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করে দিয়েছিলাম। সেটিও ভেঙে গেছে। আবার নতুন সাঁকো তৈরি করব। পাশাপাশি নতুন একটি সেতু বা কালভার্ট নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।”

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মামুনুর রশিদ বলেন, “আমি এই উপজেলায় সদ্য যোগদান করেছি। ওই এলাকার কালভার্ট ধসে পড়া এবং স্থানীয়দের দুর্ভোগ সম্পর্কে অবগত ছিলাম না। আপনার মাধ্যমে জানলাম। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

সা/ই

×