
ছবি: জনকণ্ঠ
পথের ধারে সামান্য জায়গায় পুরোনো কয়টা টিন আর খড়কুটোর তৈরি ছোট্ট ঘরে হামাগোরের বুড়া-বুড়ির শীতের রাত কাটে। ঘরে শোয়ার জন্য কোনো খাট কিংবা চৌকি নাই, নাই কোনো বিদ্যুতের আলো। মেঝেতে খড়ের বিছানা বানিয়ে তাতেই ঝড়বৃষ্টির মধ্যে রাত্রী যাপন করি তবুও খোঁজ নেই কারোও। দিনের বেলায় এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে চায়েচিন্তে আনে খাই। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বয়স্ক ভাতা ও স্ত্রী প্রতিবন্ধী ভাতা পাই। এভাবেই নিজের কথা বলছিলেন জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার হরেন্দা বাজার এলাকায় পথের ধারে খড়কুটোর ঘরে ঠাঁই হওয়া ছানাউল্লাহ (৭০) নামের বৃদ্ধ দম্পতি।
কালবৈশাখি ঝড়, বৃষ্টি ও বর্ষায় যখন বাসা বাড়িতে মানুষ নিরাপদ আশ্রয় খোঁজে,
ঠিক তখন খোলা আকাশের নিচে পথের ধারে খড়কুটোর তৈরি ঘরে খড়ের বিছানার উপর সামান্য কিছু কাপড় শরীরে জড়িয়ে রাত্রী যাপন করেছেন বাক-প্রতিবন্ধী স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে মোঃ ছানাউল্লাহ শেখ (৭০) নামের এক বৃদ্ধ দম্পতি।
ছানাউল্লাহ দম্পতি বলেন, দেশ স্বাধীনের পর গাইবান্ধা জেলা থেকে পাঁচবিবির মহিপুর এলাকায় এসে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নেন। এরপর মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ করে সেখানেই খাসের জায়গায় ঘর বানিয়ে থাকতাম। স্ত্রী সন্তানসহ সেখানেই কেটে যায় বহুকাল। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ছেলেকে বাড়ী ছেড়ে দিয়ে ভিটা-মাটি ছেড়ে চলে আসেন ছানাউল্লাহ। এরপর যাযাবর জীবনে প্রায় সাত বছর আগে উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের বড়পুকুরিয়া গ্রামের এক বাক-প্রতিবন্ধী মহিলাকে বিয়ে করে সড়কের ধারে খড়কুটোর তৈরী ছোট্ট ঘরে সংসার বাঁধেন এই বৃদ্ধ দম্পত্তি। মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভিক্ষা করে সংসার চলছে তাদের। সরকারের একটি আশ্রয়ণের ঘর চান তিনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাঁচবিবি-কামদিয়া সড়কের হরেন্দা বাজারের পুর্ব দিকে রাস্তার পাশের সামান্য কিছু জায়গায় পুরনো কিছু টিন ও খড়কুটোর তৈরী ছোট্ট ঘরে কষ্টে জীবন যাপন করেছেন ছানাউল্লাহ ও তাঁর বাক-প্রতিবন্ধী স্ত্রী। ঘরে শোয়ার জন্য কোনো খাট কিংবা চৌকি নেই, নেই কোনো বিদ্যুতের আলো। মেঝেতে খড়ের বিছানা বানিয়ে তার উপর কিছু কাপড় দিয়ে বিছানা বানিয়ে এই ঝড় বৃষ্টির রাতে রাত্রী যাপন করছেন তবুও খোঁজ নেই কারোও। ঘরের ভিতরে এলোমেলো অবস্থা। ঝড় বৃষ্টির মধ্যে কষ্টে আছেন তারা।
সাব্বির