
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গুলিতে সজল মিয়া (২০) নামে এক যুবক নিহত হওয়ার ৯ মাস পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম বাবু ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ ২১২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে।
নিহত যুবক সজল মিয়ার মা রুনা বেগম বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। ১৬ মে রাতে এ মামলা দায়ের হলেও সোমবার (১৯ মে) মামলা দায়েরের বিষয়টি সাংবাদিকরা জানতে পারেন। মামলায় মোট ৬২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী। সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় মামলার বিষয়টি জনকণ্ঠের এ প্রতিবেদকের কাছে নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম।
মামলায় আরো আসামী রয়েছেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া, প্রচার সম্পাদক তাজিম বাবু, শামীম ওসমানপুত্র অয়ন ওসমান, শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরী ওসমান, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিল মতিউর রহমান মতি, সেভেন মার্ডারে নিহত নজরুল ইসলামের শ্যালক শফিকুল ইসলামসহ ৬২ জনের নাম উল্লেখ করে। এতে অজ্ঞাত আসামি করা হয় ১০০-১৫০ জনকে।
নিহতের মা মামলায় উল্লেখ করেন, তার ছেলে সজল মিয়া তার পিতা হাসান আলীর সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায় একটি জুতার কারখানায় চাকরি করতো। ২০২৪ সালের ২০ জুলাই ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন বাদীর ছেলে সজল মিয়া আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কের ডাচ বাংলা ব্যাংকের সামনে অবস্থান নেন। এসময় মামলায় উল্লেখ আসামিরা জনতাকে প্রতিহত করতে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ওইসময় আসামিদের এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণে ভিকটিমের পেটে গুলি লাগে। তখন ঘটনাস্থলে থাকা কয়েকজন তাকে তাৎক্ষণিক চিটাগাংরোডের সুগন্ধা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তখন দেশের অবস্থা বেগতিক দেখে তার ছেলেকে পোষ্ট মর্টেম না করিয়ে তার ছেলের লাশ গ্রামের বাড়ি আড়াইহাজারে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানর অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, তার মা (বাদী) জানিয়েছিলেন তারা এতদিন শোকাহত থাকার কারণে থানায় মামলা করতে আসেননি। জুলাই আন্দোলনের নিহতদের গেজেট সজলের নাম রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। দায়ের করা এ মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিল মতিউর রহমান মতিসহ বেশ কয়েকজন আগের মামলাগুলোতে গ্রেপ্তার আছেন। তাদেরকে এ মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা গ্রেপ্তার দেখাবেন বলে জানান তিনি।
রিফাত