ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২০ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাগেরহাট মেরিন ইনস্টিটিউটে অনির্দিষ্টকালের শাটডাউন ঘোষণা

স্টাফ রিপোটার, বাগেরহাট

প্রকাশিত: ২২:১০, ১৯ মে ২০২৫

বাগেরহাট মেরিন ইনস্টিটিউটে অনির্দিষ্টকালের শাটডাউন ঘোষণা

ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ

বাগেরহাটে সিডিসি প্রদানসহ তিন দফা দাবিতে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছেন ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি শিক্ষার্থীরা। 

সোমবার (১৯ মে) সকাল ৯টায় প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।                                                                                 

এসময় শিক্ষার্থীরা সিডিসি প্রদানকর, বেকারত্ব দূর করা, ডিজি শিপিংয়ের কালো হাত ভেঙ্গে দেও গুড়িয়ে দেও,সরকারি চাকুরিতে প্রবেশাধিকার নিশ্চিতকর, প্রশিক্ষণও প্রশিক্ষকদের মান উন্নয়নকর করতে হবে এ ধরনের স্লোগান দিতে শোনা যায়।

এ সময় প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষকদের গেটের ভিতরে প্রবেশ করতে বাধা দেয় শিক্ষার্থীরা। অনুরোধের মুখে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের ভিতর প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে দশটার দিকে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী জিয়াউল হক তার গাড়িতে ফটকের সামনে আসেন। প্রায় বিশ মিনিট অপেক্ষার পরে অধ্যক্ষকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয় শিক্ষার্থীরা। পরে প্রধান ফটক ছেড়ে অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। 

এসময় বক্তব্য দেন, শেখ আমানউল্লাহ রাকিব, মিরাজ আহম্মেদ সিহাব, ধিরবচন্দ্র বর্মন, প্রিন্স হালদার প্রমুখ।                                                                                                             

শিক্ষার্থীরা বলেন, এসএসসিতে ভাল ফলাফল করে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজিতে আমরা ভর্তি হই। ভর্তির পর থেকেই শুরু হয় আমাদের সাথে বৈষম্য। চার বছরের ডিপ্লোমা শেষ করার পরে,  আমাদের চাকুরির তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের বেকার থাকতে হয়। ডিপ্লোমা ইন মেরিন ও শিপ বিল্ডিং শিক্ষার্থীদের ২০০৯ সাল পর্যন্ত বিদেশি জাহাজে চাকুরির জন্য সিডিসি-কন্টিনিউয়াস ডিসচার্জ সার্টিফিকেট প্রদান করা হত। 

কিন্তু কোন কারণ ছাড়াই শিপিং কর্পোরেশন মেরিন ও শিপবিল্ডিং ডিপ্লোমাধারীদের সিডিসি প্রদান করা বন্ধকরে দেয়। যার কারণে আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেকারত্বের হার আরও বেড়েছে।                                                                                                                  

অন্যদিকে চার বছরের ডিপ্লোমা শেষ করা বিভিন্ন পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর সহ বিভিন্ন পদে সরকারি চাকুরির সুযোগ থাকলেও, মেরিন ও শিপ বিল্ডিংয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের সেই সুযোগ নেই। এসব বিষয় নিয়ে আমরা বারবার আবেদন করার পরও সরকার কোন পদক্ষেপ নেইনি, যার ফলে আমরা সকল মেরিন এক সাথে শাটডাউন ঘোষণা করেছি। দাবি যদি সরকার মেনে না নেয়, তাহলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হচ্ছে, মেরিন ও শিপ বিল্ডিং ডিপ্লোমাধারীদের সমুদ্রগামী জাহাজের যোগদানের জন্য অনূর্ধ্ব ৬ মাসের প্রি-সী ট্রেনিং এর মাধ্যমে অফিসার ক্যাডেট সিডিসি-কন্টিনিউয়াস ডিসচার্জ সার্টিফিকেট প্রদান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ইঞ্জিন ও মেশিন সংশ্লিষ্ট বিভাগে উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে মেরিন ও শিপ বিল্ডিং ডিপ্লোমাধারীদের চাকুরি এবং প্রশিক্ষণের মান উন্নত করা।                                                                                   

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে সারা বাংলাদেশে ৬টি ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যেখানে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং ও শিপ বিল্ডিং ট্রেডে পড়ানো হয়। সিডিসি প্রদান না করা, সরকারি চাকুরির সুযোগ না থাকা ও উপযুক্ত প্রশিক্ষণ না থাকার কারণে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করার পরও বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকে বেকার থাকতে হয় বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের।

মিরাজ খান

×