ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৪ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

নাঙ্গলকোটে ভয়ংকর হয়ে উঠছে কিশোর গ্যাং

বেলাল হোসেন রিয়াজ,সংবাদদাতা,নাঙ্গলকোট,কুমিল্লা

প্রকাশিত: ২০:২৪, ১৩ মে ২০২৫

নাঙ্গলকোটে ভয়ংকর হয়ে উঠছে কিশোর গ্যাং

ছবি:সংগৃহীত

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ছিনতাইকারী ও কিশোর গ্যাংয়ের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে । নাঙ্গলকোটের  বিভিন্ন এলাকায় সন্ধ্যায় ঘনিয়ে আসলে কিশোর গেং এর সদস্যরা সক্রিয় হয়ে উঠে। কিশোরগেং এর সদস্যদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটছে প্রাণহানির ঘটনা ও।

ছিনতাইয়ের শিকার লোকজন বাড়তি ঝামেলা এড়াতে থানা পুলিশ পর্যন্ত যান না। ফলে ছিনতাইয়ের সব ঘটনা রেকর্ডও হয় না।

সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, নাঙ্গলকোটে  রীতিমতো বিষফোঁড়ায় পরিণত হয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। ছোট-বড় অন্তত ২২ টি কিশোর গ্যাং চক্র  বিভিন্ন গ্রামীণ বাজার এলাকায়  এবং পাড়া-মহল্লায় সক্রিয়। গ্রাম গঞ্জের বাজার গুলোতে রয়েছে একাধিক গ্যাং। এই গ্যাংয়ের সদস্যরা সুযোগ বুঝে ছিনতাই করে। তাছাড়া ডাকাতি, যৌন হয়রানি, মাদক সেবন, মাদক ব্যবসা, দখলবাজি, অস্ত্রবাজিসহ  রাজনৈতির ছত্রছাড়া নানা অপরাধে জড়িত গ্যাংয়ের সদস্যরা। এই অপরাধীরা  সন্ধ্যা নামতেই আরও বেশি ভয়ংকর হয়ে উঠে। তবে সেনাবাহিনী মাঠে  থাকায় রাতের আধারে সুকৌশলে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সবকিছু ছিনিয়ে নিয়ে যায়। 

ভুক্তভোগীরা জানান, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা বেশি টার্গেট করে নিম্ন আয়ের মানুষকে। রাতবিরাতে চলাফেরা করতে হয়, এই কারণে এরা রাস্তায় আক্রমণ করে। ভয়ে কেউ কথা বলার ও সাহস পান না। এই চক্রের সদস্যরা ভিন্ন কৌশলে রাতের আধারে অটোড্রাইভার কে ভাড়ার কথা বলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে অস্রের মুখে জিম্মি করে অটো ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই নাঙ্গলকোটের  কিছু সড়ক ও এলাকা চলে যায় কিশোরগেং এর  দখলে। প্রতিটি দলে ৮ থেকে ৯ জন করে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ওতপেতে থাকে। সুযোগ বুঝে পথচারী ও রিকশা থামিয়ে অস্ত্রের মুখে মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। আর বাধা দিলেই খুন-জখম করে। মূলত মাদকের টাকা জোগাড় করতেই তারা ভয়ংকর হয়ে ওঠে। 

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, নাঙ্গলকোটে গত ৪ বছরে ছিনতাইকারী ও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের হাতে প্রাণ গেছে অন্তত ২০ জনের। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ।  
আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থা এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে নাঙ্গলকোটে  অন্তত ২২ টি গ্যাংয়ের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে কিশোর গ্যাংয়ের কোনো তালিকা নেই। 

মিজানুর রহমান নামে এক ভুক্তভোগী জানান, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, মানুষকে হয়রানি, মারধর বা রাজনৈতিক মিছিলে এসব কিশোর তরুণদের ব্যবহার করা হয়।

নাঙ্গলকোট  থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) এ কে ফজলুল হক  জনকন্ঠকে বলেন, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ দমন আমাদের চেষ্টা  চলছে। অপরাধ যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে, সেই লক্ষ্যে টহল জোরদারসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এসকল  কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অভ্যাহত থাকবে। 

আলীম

×