
ছবি: সংগৃহীত
খেলাফত শ্রমিক আন্দোলনের এক নেতাকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নাশকতার মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেপ্তারের অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে জেলা সদরে চলছে লাগাতার বিক্ষোভ। খেলাফত আন্দোলন, খেলাফত শ্রমিক আন্দোলন ও হোটেল শ্রমিকদের এসব বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে দেয়া হচ্ছে নিঃশর্ত মুক্তির আল্টিমেটাম।
গ্রেপ্তার হওয়া ওই শ্রমিক নেতার নাম আনোয়ার হোসেন (৩৫)। তিনি খেলাফত শ্রমিক আন্দোলন ও হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের জেলা শাখার সভাপতি। সোমবার সন্ধ্যার আগে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এদিকে মঙ্গলবার সকালে আন্দোলনের মুখেই তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
জানা গেছে, রবিবার রাতে সদর উপজেলার আমলী কেশবপুর গ্রামের তাঁতীদল নেতা সুমন মিয়া বাদী হয়ে নেত্রকোনা মডেল থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের ধারায় একটি মামলা করেন। ঘটনার দুই বছর পর দায়ের করা এ মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাবেক দুই নারী সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও নেত্রকোনা পৌরসভার সাবেক মেয়রসহ ২৫২ জনকে সুনির্দিষ্ট আসামি করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ৭-৮শ জনকে। শ্রমিকদের অভিযোগ, ওই মামলায় খেলাফত শ্রমিক আন্দোলন ও হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের জেলা শাখার সভাপতি আনেআয়ার হোসেনকেও মিথ্যা আসামি করা হয়েছে। আসামির তালিকায় তার নামের ক্রমিক নং ৯৩। মামলা দায়েরের পর সোমবার বিকেলেই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। আর এর পরপরই খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব গাজী আব্দুর রহিমের নেতৃত্বে খেলাফত আন্দোলন, খেলাফত শ্রমিক আন্দোলন ও হোটেল-রেঁস্তোরার শ্রমিকরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিল শেষে তারা নেত্রকোনা মডেল থানা ঘেরাও করলে পুলিশ থানার প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়। বিক্ষোভকারীরা তখন সেখানেই প্রতিবাদ সমাবেশ করে রাত ১২টার মধ্যে আনোয়ারের মুক্তি দাবি করেন। তা না হলে মঙ্গলবার সকাল থেকে কর্মবিরতি পালনসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ঘোষণা করেন তারা।
নেত্রকোনা মডেল থানার এসআই মাজহারুল জানান, গ্রেপ্তার আসামি আনোয়ারকে মঙ্গলবার সকালে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে আনোয়ারকে মুক্তির দাবিতে জেলা সদরের হোটেল শ্রমিকরা পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী মঙ্গলবার সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করেন। বিকেলে গাজী আব্দুর রহিমের নেতৃত্বে খেলাফত আন্দোলন, খেলাফত শ্রমিক আন্দোলন ও হোটেল শ্রমিকরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরেন। মিছিল শেষে গাজী আব্দুর রহিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘শ্রমিক নেতা আনোয়ার হোসেন ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। তাকে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় ফাঁসিয়ে অযথা হয়রানি করা হচ্ছে। তাকে দ্রুত নিঃশর্ত মুক্তি না দিলে আমরা কঠোর কর্মসূচি গ্রহণে বাধ্য হব।’ তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
এএইচএ