বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হচ্ছে জারুলছড়ি ছড়া। ছবি: জনকণ্ঠ
খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় ৫৩ বছরেও পূরণ হয়নি জারুলছড়ি ছড়ার ওপর ব্রীজ নির্মাণের দাবি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এ ছড়ার ওপর ব্রীজ নির্মাণের দাবী জানিয়ে আসছে উপজেলার বাবুছড়া ইউনিয়নের দুর্গম ৯ পাহাড়ি গ্রামের মানুষ। ১২০ থেকে ১৩০ ফুট প্রস্থ খরস্রোতা
এই পাহাড়ি ছড়ার ওপর ব্রীজ না থাকায় যাতায়াত ক্ষেত্রে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে দুর্গম এই ৯ পাহাড়ি গ্রামের স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। শুকনো মৌসুমে যেমন তেমন ভাবে চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে বেশির ভাগ সময় তাদের কাটাতে হয় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায়।
ওই সময়ে বন্ধ থাকে শিক্ষার্থীদের স্কুল কলেজের পড়াশোনা। একমাত্র যোগাযোগ সমস্যার কারনে জুমে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্যও পাচ্ছেন না দুর্গম এসব পাহাড়ি গ্রামের মানুষ। শুধ তাই নয় যোগাযোগ সমস্যার কারনে কোনো প্রকার নাগরিক সুযোগ সুবিধাও নেই তাদের। জারুলছড়ি ছড়ার ওপর ব্রীজ নির্মাণ করা হলে পাল্টে যাবে দুর্গম এই ৯ গ্রামের চিত্র এমনটাই মনে করছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে দীঘিনালা সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী কিরন চাকমা ও বাবুছড়া কলেজের শিক্ষার্থী আশাকো চাকমা জানান, জারুলছড়ি ছড়ার ওপর ব্রীজ না থাকায় ছড়ার পশ্চিম পাড়ে বসবাসরত ৯ গ্রামের মানুষ সর্বক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। শুধু তাই নয় ব্রীজ না থাকায় বর্ষা মৌসুমে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়াও বন্ধ রাখতে হয়। তাই জরুরী ভিত্তিতে জারুলছড়ি ছড়ার ওপর ব্রীজ নির্মাণের দাবী জানান তারা।
গ্রাম প্রধান পুর্ণজয় চাকমা ও কনিকা চাকমা জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আমরা জারুলছড়ি ছড়ার ওপর ব্রীজ নির্মাণের দাবী জানিয়ে আসছি। পরিতাপের বিষয় স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও আমাদের এ দাবীটি আলোর মুখ দেখেনি। বর্তমানে জারুলছড়ি ছড়ার ওপর ব্রীজ নির্মাণের দাবীটি দুর্গম এই ৯ পাহাড়ি গ্রামের নারী পুরুষ শিশু কিশোরসহ সকলের প্রানের দাবিতে পরিণত হয়েছে বলে জানানা তারা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শান্তিপ্রিয় চাকমা জানান, জারুলছড়ি ছড়ার ওপর ব্রীজ নির্মাণ করা হলে ছড়ার পশ্চিম পাড়ের ৯ টি পাহাড়ি গ্রামের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও কৃষিসহ সর্বক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। তাই যতো তারাতারি সম্ভব ব্রীজ নির্মাণ করা জরুরী বলে জানান তিনি।
বাবুছড়া ইউপি চেয়ারম্যান গগন বিকাশ চাকমা জানান, জারুলছড়ি ছড়ার ওপর ব্রীজ নির্মাণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বহুবার আবেদন নিবেদন করেও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। অথচ একটি ব্রীজের জন্য ৯ টি পাহাড়ি গ্রামের মানুষ দীর্ঘ ৫৩ বছর ধরে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তাই দুর্গম এসব পাহাড়ি গ্রামের মানুষের যোগাযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে জারুলছড়ি ছড়ার ওপর ব্রীজ নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
এসআর