ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১

ঈশ্বরগঞ্জে ভেঙে পড়া বেইলি ব্রিজ

দুর্ভোগের কবলে ১৪ গ্রামের মানুষ

প্রকাশিত: ২১:৩০, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দুর্ভোগের কবলে ১৪ গ্রামের মানুষ

সংযোগ সড়কে ভেঙে পড়া বেইলি ব্রিজ

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ভেঙে পড়া স্টিলের বেইলি ব্রিজটি গত ২০ দিনেও মেরামত না হওয়ায় চরম ভোগান্তির কবলে পড়েছেন প্রসূতি জরুরি রোগীসহ এলাকার নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। উচাখিলা রাজীবপুর ইউনিয়নসহ আশপাশের ১৪ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ এই বেইলি ব্রিজ দিয়ে ত্রিশাল, ঈশ্বরগঞ্জ ময়মনসিংহ সদরে যাতায়াত করে আসছিলেন। গত ১৮ আগস্ট রাতে ভারি বর্ষণ প্রবল পানির তোড়ে  সড়ক বিভাগের বেইলি ব্রিজের দুই পাড়ের মাটি সরে যাওয়ার কারণে ব্রিজটি ভেঙে পড়ে।

স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পরে পাশের বিকল্প পথে বাশের সাঁকো তৈরি করে মানুষ পারাপারের ব্যবস্থা করলেও প্রসূতি জরুরি রোগী শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিতে হচ্ছে। কৃষিসহ অন্যান্য নিত্যপণ্য পরিবহন হালকা যান পারাপারেও রয়েছে এই ঝুঁকি। স্থানীয়দের অভিযোগ সড়ক বিভাগের গাফিলতি দায়সারা নির্মাণকাজের কারণেই বেইলি ব্রিজটি ভেঙে পড়েছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে ময়মনসিংহ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাদ্দাম হোসেন জানান, অতি বৃষ্টিতে ব্রিজের দুই পাড়ের মাটি সরে যাওয়ায় এমনটি হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যয় বরাদ্দ অনুমোদন পেলেই বেইলি ব্রিজটি নির্মাণ করা হবে। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী অবিলম্বে ব্রিজটি মেরামতের দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, গত ২০ আগস্ট রাতে ভারি বৃষ্টির পর পানির প্রবল তোড়ে ত্রিশাল, রাজীবপুর, উচাখিলা, ঈশ্বরগঞ্জ সড়কের মরিচার চর গ্রামের সড়ক বিভাগের এই বেইল ব্রিজটি ভেঙে পড়ে।

এতে ২১ আগস্ট ভোর থেকে ত্রিশাল   ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা এবং ময়মনসিংহ জেলা সদরের সঙ্গে উচাখিলা রাজীবপুর ইউনিয়নসহ আশপাশের ১৪ গ্রামের মানুষের সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। হঠাৎ দুর্ভোগের কবলে পড়েন লক্ষাধিক মানুষ। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন প্রসূতি জরুরি রোগীসহ শিক্ষার্থীরা। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন বিকল্প পারপারের জন্য বাঁশের সাঁকো তৈরি করে দেয়। এতে কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে হলেও এলাকার মানুষ পারপার হতে পারছে। তবে প্রসূতি জরুরি রোগী পারপারসহ কৃষি অন্যান্য নিত্যপণ্য পারপারে ঝুঁকি থাকছে। যাতায়াত করতে পারছে না সিএনজি অটো রিক্সাসহ হালকা যানবাহন। সময় বাড়তি ভাড়া গুনে ঘুর পথে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।

মরিচারচর গ্রামের দিনমজুর আফজাল মিয়া অভিযোগ করে জানান, গত ২০২৩ সালে সড়ক বিভাগ স্টিলের এই বেইলি ব্রিজটি করার সময় তাড়াহুড়া করে। দায়সারা কাজের কারণেই ব্রিজটি ভেঙে পড়ে বলে মনে করছেন তিনি। এর আগে বেইলি ব্রিজের জায়গায় স্থানীয় সরকার বিভাগ-এলজিইডির কালভার্ট ছিল। গত বছর ভারি বৃষ্টির কারলে কালভার্টের দুইপাড়ের মাটি সরে গেলে অচলাবস্থা তৈরি হয়। সময় এলজিইডির কাছ থেকে সড়ক বিভাগ বুঝে নিয়ে সেখানে তড়িঘড়ি করে স্টিলের বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করে। কিন্তু বছর না যেতেই এবার বৃষ্টিতে ফের দুই পাড়ের মাটি সরে ভেঙে পড়ে ব্রিজটি।

কালভার্ট ভেঙে যাওয়ার কারণ না খুঁজে ব্রিজটি করায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে বলে দাবি সচেতন এলাকাবাসীর।  রাজীবপুর গ্রামের কৃষক ফজলুল হক জানান, বেইলি ব্রিজ ভাঙার ১৯ দিন অতিবাহিত হলেও সড়ক বিভাগ মেরামতের উদ্যোগ নিচ্ছে না। ফলে এলাকাবাসীকে ঘুরপথে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। এতে ব্যয় সময় দুটোই  বেড়েছে। সিএনজি অটো রিক্সা, ভ্যান   মোটরসাইকেল নিয়ে পারাপার হওয়া যাচ্ছে না। সবজির ভান্ডার হিসেবে পরিচিত উচাখিলা রাজীবপুর চরের উৎপাদিত শাক সবজি কৃষিপণ্য পরিবহনে কৃষকদের বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে।

 

 

 

×