ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন ॥ রাজধানীতে বৃষ্টি

সারাদেশেই বইছে তাপপ্রবাহ

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:২১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

সারাদেশেই বইছে তাপপ্রবাহ

তীব্র তাপপ্রবাহে স্বস্তি পেতে এক রিক্সাচালক মাথায় পানি ঢালছেন

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলের ওপর দিয়েই বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। সূর্যের চোখ রাঙানিতে ঘরের বাইরে বের হওয়াই যেন দায়। দেশের কয়েক জায়গায় হালকা ঝড়-বৃষ্টি হলেও গরম কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, পর্যাপ্ত ঝড়-বৃষ্টি না হলে তাপপ্রবাহ কমে আসার সম্ভাবনা কম।

বরং আগামী শুক্রবার থেকে কোনো কোনো এলাকায় তাপমাত্রা আরও কিছুটা বেড়ে ৪২ ডিগ্রিতে গিয়ে উঠতে পারে। বুধবার শুধু রংপুর অঞ্চল ছাড়া সব বিভাগেই চলেছে তাপপ্রবাহ। এদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন রাজধানীতে গরমের অনুভূতি ছিল ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি। বিকালের দিকে রাজধানীর কয়েক স্থানে এক পশলা বৃষ্টি হওয়ায় নগরবাসীর মধ্যে স্বস্তি দেখা গেছে।
রাজধানীর গুলশান, বনানী, বারিধারা, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় বিকেল সাড়ে ৫টায় হালকা হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি ঝরেছে। আর এতেই প্রায় ৪০ ছুঁই ছুঁই ঢাকার তাপমাত্রা কমে আসে। তবে হঠাৎ বৃষ্টিতে গণপরিবহনের যাত্রী ও সড়কে থাকা পথচারী ও ভ্রাম্যমাণ দোকানীরা ভোগান্তিতে পড়েন। বুধবার দুপুরের পর ঢাকার আকাশ মেঘে ঢেকে যায়। এর পর মেঘ সরে আবার দেখা মেলে সূর্যের। বিকেল সাড়ে ৫টার পর বৃষ্টি শুরু হয়। কিছুক্ষণ চলার পর সেই বৃষ্টি অবশ্য থেমে যায়। বৃষ্টির পর এসব এলাকার আকাশ মেঘলা ছিল। তবে এ সময়ের বৃষ্টি বেশি সময় স্থায়ী থাকে না বলে আবহাওয়া অফিস সূত্র জানিয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে অতি তীব্র তাপ প্রবাহ বলা হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বুধবার দেশের অধিকাংশ এলাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। এদিন ফরিদপুরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, ৩৯.২ ডিগ্রি, ঈশ^রদীতে ৩৯.৮ ডিগ্রি, শ্রীমঙ্গলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন রাঙ্গামাটিতে ৩৯ ডিগ্রি, খুলনায় ৩৯.৫ ডিগ্রি, মংলায় ৪০. ৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, অনেক দিন ধরে তাপমাত্রা টানা বেশি থাকায় মাটির নিচের পানির স্তর আরও নিচে নেমে যেতে থাকে। এ অবস্থায় পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে গরমের তাপমাত্রা যা আছে, তার চেয়ে বেশি অনুভূত হয়। ঢাকাসহ দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলের এমন অবস্থা দেখা যাচ্ছে। 
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, এই মৌসুম ঝড়-বৃষ্টির মৌসুম। ঝড়-বৃষ্টি হতেই থাকবে। তবে ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ যদি পর্যাপ্ত না হয়, তা হলে গরম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। এই মৌসুমে তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রির ওপরে উঠতে পারে বলেও শঙ্কা রয়েছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝেড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

চুয়াডাঙ্গা ও বাগেরহাট জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু কিছু জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

×