ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

অপেক্ষায় অর্ধশতাধিক

টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে আরও ১৬ বিজিপির অনুপ্রবেশ

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার/ নিজস্ব সংবাদদাতা, টেকনাফ/ সংবাদদাতা, উখিয়া

প্রকাশিত: ২৩:২২, ১৫ এপ্রিল ২০২৪

টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে আরও ১৬ বিজিপির অনুপ্রবেশ

টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে আরও ১৬ বিজিপির অনুপ্রবেশ

টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে দুই দফায় আহতাবস্থায় ১৬ জন সশস্ত্র বিজিপি সদস্য অনুপ্রবেশ করেছে। মিয়ানমারে চলমান সংঘাতে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ে টিকতে না পেরে প্রাণ বাঁচাতে এ দেশে সশস্ত্র অবস্থায় ঢুকে বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণ করেছে ওই বিজিপি সদস্যরা। শনিবার ও রবিবার সকালে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যরা পৃথকভাবে টেকনাফের ঝিমংখালী ও খারাংখালী সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে এ দেশে ঢুকে পড়ে আরও অর্ধশতাধিক বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে ঢোকার অপেক্ষায় রয়েছে। 
জানা গেছে, সীমান্তের ওপারে আরাকান আর্মি এবং বিজিপি সদস্যদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষে অন্তত ৩৫ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে। প্রাণ বাঁচাতে ঝিমংখালী ও খারাংখালী সীমান্ত বিওপিতে এসে পৃথকভাবে আহতাবস্থায় ১৬ জন স্বশস্ত্র বিজিপি সদস্য বিজিবির কাছে আতœসমর্পণ করে। বিজিবি মিয়ানমারের ওইসব সৈন্যকে নিরস্ত্র করে বর্তমানে তাদের (বিজিবি)  হেফাজতে  নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আহত বিজিপি সদস্যদের হাসপাতালে চিকিৎসা সেবাও দেওয়া হচ্ছে।
মিয়ানমারে চলমান সংঘাতে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ে টিকতে না পেরে প্রাণ বাঁচাতে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে দ্বিতীয় দফায় ফের পাঁচ বিজিপি সদস্য অনুপ্রবেশ করেছে। রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্তের খারাংখালী পয়েন্ট দিয়ে ওই বিজিপি সদস্যরা এদেশে ঢুকে পড়ে। টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রবিবার রাতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) আরও ৫ জন সদস্য হোয়াইক্যং সীমান্তে অনুপ্রবেশ করে। এ নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ জন বিজিপি সদস্য বিজিবির হেফাজতে রয়েছে।
মিয়ানমারের চলমান সংঘাতের জের ধরে দুই সেনা সদস্যসহ মিয়ানমারের সরকারী বাহিনীর ১৬ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে আশ্রয় নেয়। এ নিয়ে ২৪ ঘণ্টায় তিন দফায়  পালিয়ে এসেছে আসা মিয়ানমার সেনাবাহিনী বিজিপির সদস্য সংখ্যা হচ্ছে ১৬ জন। সোমবার দুপুরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশফাঁড়ি সীমান্ত দিয়ে সর্বশেষ দুই সেনা সদস্য পালিয়ে আসে। তাদের নিরস্ত্র করে হেফাজতে নিয়েছে বিজিবি।

এর আগে রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের খারাংখালি সীমান্ত দিয়ে পাঁচ বিজিপি সদস্য পালিয়ে আসে। এর কিছু সময় আগে পালিয়ে আসে ৯ জন বিজিপি সদস্য। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ। 
কক্সবাজার বিজিবির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত দুই দিনে টেকনাফ ও বাইশফাঁড়ি সীমান্ত দিয়ে মোট ১৬ জন পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এদের নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে ১১ বিজিবি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন বিভিন্ন সময়ে আশ্রয় নেওয়া ১৮০ জন। সব মিলিয়ে এখন বাংলাদেশে মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর সদস্য সংখ্যা হচ্ছে ১৯৬ জন। যার মধ্যে পাঁচ জন সেনা সদস্য এবং ১৯১ জন বিজিপি সদস্য।

এদের মিয়ানমারের ফেরত পাঠানোর জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আলোচনা চলছে জানিয়ে বিজিবি কর্মকর্তা বলেন, আগামী সপ্তাহে এদের ফেরত পাঠানো হতে পারে। গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন আরও ৩৩০ জন। যাদের গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জলপথে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে।      
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) মধ্যে চলমান সংঘাতের কারণে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে বাহিনীটির ১৬ সদস্য আশ্রয় নিয়েছেন। এ নিয়ে নতুন করে বাংলাদেশে মোট আশ্রয়প্রার্থী দাঁড়াল ১৯৬ জন সেনা ও বিজিপি সদস্য।
সোমবার দুপুরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশফাঁড়ি সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের দুই সেনা সদস্য পালিয়ে আসে। এর আগের দিন রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার হোয়াইক্যংয়ের খারাংখালি সীমান্ত অতিক্রম করে আসে পাঁচ সেনা সদস্য। একই দিন সকালে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের ঝিমংখালী ও খারাংখালী সীমান্ত দিয়ে আরও ৯ জন বিজিপি সদস্য পালিয়ে আসে। তাদের কাছ থেকে অস্ত্র জমা নিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গত দুই দিনে টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশফাঁড়ি সীমান্ত দিয়ে মোট ১৬ জন পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এই ১৬ জন সবাইকে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে ১১ বিজিবি হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওখানে আগে থেকে ১৮০ জন আশ্রয়রত রয়েছে। এ নিয়ে মোট ১৯৬ জন ওখানে রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫ জন সেনা সদস্য এবং অপর ১৯১ জন বিজিপি সদস্য।

তাদের মিয়ানমারের ফেরত পাঠানোর জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আলোচনা চলছে। আগামী সপ্তাহে তাদের ফেরত পাঠানো হতে পারে। এর আগে কয়েক দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন আরও ৩৩০ জন। তাদের গত ১৫ ফেব্রুয়ারি উখিয়ার ইনানী নৌ বাহিনীর জেটি ঘাট দিয়ে ৩৩০ জনকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।

×