ইশতেহার ঘোষণা
আগামী ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ময়মনসিংহ পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচন। প্রচারের অংশ হিসেবে স্মার্ট নগরী গড়তে ১৫ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ‘হাতি’ মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদেকুল হক খান মিল্কি টজু।
সোমবার দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেন। প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে ময়মনসিংহ পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের একজন ব্যক্তি দায়িত্বে আছেন। নেতৃত্বের ব্যর্থতার কারণে নগরবাসীর জীবনে ভয়াবহ পরিণতি নেমে এসেছে।
টজুর ইশতেহারের মধ্যে রয়েছে-
১.ময়মনসিংহ সিটিকে স্মার্ট হিসেবে গড়ে তোলা
২. হোল্ডিং ট্যাক্স সামঞ্জস্যপূর্ণ করা
৩. নগরীর যানজট ও বায়ু দূষণমুক্ত করা
৪. গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ওভারব্রিজ ও ফ্লাইওভার নির্মাণ
৫. জলাবদ্ধতা দূর করতে ড্রেনেজ সিস্টেম আধুনিক, প্রশস্ত ও উন্নত করা
৬. ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজকে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া
৭. আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল সুবিধাজনক স্থানে স্থানান্তর করা
৮. ব্রহ্মপুত্র নদ ড্রেজিং করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনা
৯. নদের তীর দিয়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণ
১০. শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা
১১. পরিকল্পিতভাবে পার্ক ও পাবলিক টয়লেট নির্মাণ।
এছাড়া খেলাধুলা, চিত্তবিনোদন ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড জোরদার করার মাধ্যমে যুব সমাজকে মাদকসহ অসামাজিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখার উদ্যোগ গ্রহণ, শশীলজ ও জয়নুল যাদুঘরসহ ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো আরও উন্নত ও সমৃদ্ধ করা, নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক পরিষ্কার ও জঞ্জাল মুক্ত করা এবং আনন্দ মোহন কলেজকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করাও টজুর ইশতেহারে রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এ মেয়র প্রার্থী বলেন, ১৮৬৯ সালে এপ্রিল মাসে ২ দশমিক ১৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনে নাসিরাবাদ মিউনিসিপিলিটি বা টাউনশীপ নামে আজকের এই ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের গোড়াপত্তন হয়। এটি ছিল উপমহাদেশের দ্বিতীয় মিউনিসিপ্যালিটি বা টাউনশীপ। ১৯০৫ সালে এটি ময়মনসিংহ মিউনিসিপ্যালিটি নামকরণ করার পর ১৯৭২ সালে ময়মনসিংহ পৌরসভা নামে এই প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়। নাসিরাবাদ মিউনিসিপ্যালিটি বর্তমানে ৯১ দশমিক ৩১৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন।
অন্য সিটি করপোরেশনগুলোতে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন সেসব থেকে যোজন যোজন পিছিয়ে আছে উল্লেখ করে শহর আওয়ামী লীগের সাবেক এ সভাপতি বলেন, “প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে ময়মনসিংহ পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের একজন ব্যক্তি দায়িত্বে আছেন। নেতৃত্বের ব্যর্থতার কারণে নগরবাসীর জীবনে ভয়াবহ পরিণতি নেমে এসেছে।
“এ অবস্থায় স্মার্ট সিটি গড়তে আগামী ৯ মার্চের নির্বাচনে আমি নগরবাসীর সহযোগিতা চাই।”
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো প্রার্থী অ্যাডভোকেট ফারামার্জ আল নূর রাজীব, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নেতা ফারুক খানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
টজু ছাড়াও মেয়র পদে ময়মনসিংহ সিটির সদ্য পদত্যাগ করা মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু দেওয়াল ঘড়ি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম ঘোড়া, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সদস্য কৃষিবিদ ড. রেজাউল হক হরিণ এবং জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম স্বপন মণ্ডল লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে লড়াই করছেন।
ঘনিয়ে আসা এই সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে নগরজুড়ে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রার্থীদের বিরামহীন প্রচারে চলছে ভোট প্রার্থনা।
২০১৯ সালের ৫ মে অনুষ্ঠিত হয় এই ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন। সে সময় প্রশাসক পদে বহাল থেকেই নির্বাচনে অংশ নেন টিটু। ওই নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হন তিনি।
বর্তমান সিটি করপোরেশনে ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯০ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৭১ জন পুরুষ এবং ১ লাখ ৭২ হাজার ৬১০ জন নারী। এছাড়াও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে ৯ জন।
আগামী ৯ মার্চ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএমের মাধ্যমে ময়মনসিংহ সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলবে।
এস