ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

ফের নাশকতার অপচেষ্টা

নেত্রকোনায় অল্পের জন্য রক্ষা পেল ৩শ’ ট্রেনযাত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা

প্রকাশিত: ২৩:৫০, ২ জানুয়ারি ২০২৪

নেত্রকোনায় অল্পের জন্য রক্ষা পেল ৩শ’ ট্রেনযাত্রী

নেত্রকোনায় রেললাইন থেকে ডগ স্পাইক খুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। অল্পের জন্য দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় লোকাল ট্রেন (বাঁয়ে)

অল্পের জন্য ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন ময়মনসিংহ থেকে জারিয়াগামী একটি লোকাল ট্রেনের তিন শতাধিক যাত্রী। ১৪টি স্লিপারের ২৮টি ডগ স্পাইক (হুক) রহস্যজনকভাবে খুলে থাকায় মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার বালুঘাটা এলাকায় দেখা দেয় এমন দুর্ঘটনার আশঙ্কা। তবে কর্তব্যরত আনসার সদস্য, রেলের কর্মচারী ও উপজেলা প্রশাসনের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থায় ট্রেনটিসহ যাত্রীরা রক্ষা পান।

পূর্বধলা উপজেলা প্রশাসন ও রেলের স্থানীয় কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে ঘটনাটিকে ‘নাশকতার অপচেষ্টা’ বলেই সন্দেহ করছেন। তবে ভিন্নমত পোষণ করেছেন জেলা পুলিশ সুপার। স্থানীয় রেল কর্মচারী ও আনসার সদস্যরা জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা পূর্বধলা-জারিয়া রেল স্টেশনের মাঝামাঝি বালুঘাটা এলাকার ১৭ নং রেলসেতুর ওপর রেললাইনের বেশ কিছু ডগ স্পাইক (হুক) খুলে থাকার দৃশ্য দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে তারা ঘটনাটি জারিয়া ও পূর্বধলা রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানান।

ওই সময় শ্যামগঞ্জ স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা ২৭২ নং লোকাল ট্রেনটি পূর্বধলা স্টেশনের দিকে যাচ্ছিল। আর এর কয়েক মিনিট পরই যাওয়ার কথা ছিল জারিয়া স্টেশনে। আনসার সদস্যদের কাছ থেকে ঘটনা জানার পর ইউএনও খবিরুল ইসলাম ও স্টেশন মাস্টার আব্দুল মোমেন তাৎক্ষণিক বিষয়টি ট্রেন চালককে অবগত করেন। এরপর ৮টার দিকে চালক ঘটনাস্থলের অন্তত ২শ’ গজ আগে গতি থামিয়ে দিয়ে ট্রেনটি রক্ষা করেন। ফলে পাঁচটি বগিতে থাকা তিন শতাধিক যাত্রীও ভয়াবাহ দুর্ঘটনার কবল থেকে বেঁচে যান। পরবর্তীতে রেলের মিস্ত্রিরা এসে আবার ১৫টি ডগস্পাইক স্থাপন করলে সকাল ১০টা ৫ মিনিটের দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। 
পূর্বধলার স্টেশন মাস্টার আব্দুল মোমেন ও জারিয়ার স্টেশন মাস্টার মনির হোসেন বলেন, ডগ স্পাইকের সাহায্যে কাঠের স্লিপারগুলো লোহার পাতের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। ১৪টি স্লিপারের ২৮টি ডগ স্পাইক একই সময়ে খুলে থাকার ঘটনাটি স্বাভাবিক নয়। খুবই রহস্যজনক। দুষ্কৃতকারীরা খুলে নিয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। এ দুই রেল কর্মকর্তা বলে, আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। আব্দুল মোমেন আরও বলেন, টের না পেলে ট্রেনটি ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পতিত হতো। এমনকি ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনাও ঘটতে পারত।

পূর্বধলার ইউএনও খবিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে আমার কাছেও নাশকতার চেষ্টা বলেই মনে হয়েছে। তবে তদন্ত করলে বিষয়টি সুস্পষ্ট হবে।’ অন্যদিকে জেলার পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘প্রাথমিক তথ্যে ঘটনাটি আমাদের কাছে নাশকতা বলে মনে হচ্ছে না। কারণ ডগ স্পাইকগুলো খুলে নেওয়ার মতো কোনো দাগ বা আলামত দেখা যায়নি। এমনও হতে পারে এগুলো আগে থেকেই খুলে আছে।’ পুলিশ সুপার আরও বলেন, এ বিষয়ে রেল কর্র্তৃপক্ষ আইনি সহযোগিতা চাইলে আমরা সহযোগিতা করব।

×