ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩১ ভাদ্র ১৪৩১

ফসল রক্ষায় স্থায়ী পদক্ষেপ দাবি

বন্যহাতির তাণ্ডবে অতিষ্ঠ কৃষক

সংবাদদাতা,  নালিতাবাড়ী,  শেরপুর

প্রকাশিত: ২১:৩১, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বন্যহাতির তাণ্ডবে অতিষ্ঠ কৃষক

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে পাহাড় থেকে নেমে আসা হাতি 

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী পাহাড়ি গ্রামগুলোতে আবারও হাতির অব্যাহত তা-ব শুরু হয়েছে। প্রায় প্রতি রাতেই আমন ফসলের খেতে হামলা করছে বন্যহাতি। এতে অতিষ্ঠ পাহাড়ি এলাকার মানুষ। গ্রামবাসী ও কৃষকরা তাদের জানমাল রক্ষায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। বন্যহাতি ও ফসল রক্ষায় সরকারিভাবে স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। 
জানা গেছে, প্রায় ৪০-৫০টির মতো বন্যহাতির পাল খাবারের সন্ধানে উঠতি আমন ধানখেতে হানা দিচ্ছে। এতে আমন ধানখেতের থোরধান খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করছে। ফসল রক্ষায় কৃষকরা রাতে মশাল জ্বালিয়ে, ঢাকঢোল বাজিয়ে, টিন পিটিয়ে ও হৈ-হুল্লোর করে ধানখেত পাহারা দিচ্ছেন। এলাকাবাসী জানান, দিনের বেলায় বন্যহাতির পাল গহীন অরণ্যে লুকিয়ে থাকে। আর সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই খাদ্যের সন্ধানে বাড়িঘর ও ফসলের মাঠে তা-ব চালায়। এ সময় ক্ষুধার্ত বন্যহাতিগুলো তাড়াতে গেলে তারাও মানুষের ওপর আক্রমণ করে। এতে মাঝে মধ্যেই হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে।

খাবারের সন্ধানে উপজেলার সীমান্তবর্তী পোড়াগাঁও ইউনিয়নের দাওধারা কাটাবাড়ি, ডালুকোনা, আন্ধারুপাড়া খলচান্দা, বুরুঙ্গা কালাপানি ও সমেশ্চুড়া গ্রামের বাসিন্দাদের এখন নির্ঘুম রাত কাটছে। বন্যহাতির তা-ব থেকে ফসলের খেত রক্ষা করতে গ্রামের লোকজন পালাক্রমে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। গত কয়েকদিনে পাহাড়ি গ্র্রামের কৃষকদের প্রায় ২০ একর জমির আমন ধানখেত খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে বিনষ্ট করে দিয়েছে হাতি। 
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, গত মঙ্গলবার থেকে প্রায় অর্ধশতাধিক বন্যহাতির একটি পাল খাবারের সন্ধানে পাহাড়ি গ্রামের ৩০-৩৫ কৃষকের আমনের খেত ও সামাজিক বনায়নের চারাগাছ নষ্ট করেছে। হাতিগুলো এলাকার বুরুঙ্গা কালাপানি লালটিলা নামক গভীর জঙ্গলে অবস্থান করছে। সন্ধ্যা এলেই লোকালয়ে হানা দিচ্ছে। এ সময় গ্রামের লোকজন মশাল ও খড় জ্বালিয়ে, বাঁশি বাজিয়ে, হৈ চৈ করে, ঢাকঢোল পিটিয়ে এবং পটকা ফুটিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করছেন। 
সংশ্লিষ্ট পোড়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হযরত আলী বলেন, প্রতিবছর বন্যহাতির পাল খাবারের খোঁজে লোকালয়ে এসে ফসল নষ্টের পাশাপাশি প্রাণহানি ঘটাচ্ছে। এই হাতিগুলো তাড়ানোর জন্য স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষ ও কৃষকরা হাতির ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটান। এর একটি স্থায়ী সমাধান হওয়া দরকার। এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বন্যহাতির পালটি দিনে উপজেলার পাহাড়ি এলাকার গভীর জঙ্গলে অবস্থান করছে। আর সন্ধ্যা হলেই খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে আসছে। আমরা বন্যহাতি ও ফসল রক্ষায় তৎপর রয়েছি।

×