ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

জুনাইদের শখ মিটাতে বাড়িতে উদ্যোক্তাদের ভিড়

নীতিশ চন্দ্র বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২০:৪৯, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

জুনাইদের শখ মিটাতে বাড়িতে উদ্যোক্তাদের ভিড়

বাড়ির পাশের বিলে নৌকায় ঘুরছে জুনাইদ। ছবি: জনকণ্ঠ

বিমান বন্দরের নিরাপত্তা বেষ্টনি পার হয়ে বিমানে উঠে বসা জুনাইদ এখন বাড়ির পাশের বিলে নৌকায় ঘুরছে। তাকে দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজনের আসা-যাওয়া শুরু হয়েছে। তার শখ মিটাতে স্ব-উদ্যোগে তাকে বিমানে চড়িয়ে ঘুরানোর জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্যোক্তারা আসছেন। 

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এক উদ্যোক্তার সঙ্গে বাড়ির পাশের বিলে নৌকা ভ্রমণ করেছে। প্রায় সারাদিনই জুনাইদের দর্শনার্থীদের সঙ্গে সময় কাটছে। 

এর আগে বুধবার সকালে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের কাছ থেকে জুনাইদকে বুঝে নিয়ে ছোট চাচা ইউসুফ মোল্লা ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার পারইহাটি গ্রামে পৌঁছেন। 

বাড়ির সামনে পৌঁছে চাচা ইজি-বাইকের টাকা পরিশোধের ফাঁকে সেখান থেকেই সে আবারও পালায়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা খোঁজাখুঁজি করে পরে মুকসুদপুর সদরে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়। এরপর তাকে বাড়ি এনে ঘরে পায়ে শিকল দিয়ে আটকে রাখা হয়। 

বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় সাংবাদিকরা তাকে দেখতে গেলে পায়ের শিকল খুলে দেয়া হয়। তারপর থেকে সারাদিন সে মুক্ত অবস্থায় বাড়ির আশপাশ দিয়ে সময় কাটায় বিভিন্ন স্থান থেকে আসা উৎসুক মানুষের সঙ্গে। 

জুনাইদের ছোট চাচা ইউসুফ মোল্লা জানিয়েছেন, তার দুরন্তপনায় বাধ্য হয়ে তাকে শিকল দিতে হয়েছিল। জুনাইদ তার বড় ভাই ইমরান মোল্লার ছেলে; মুকসুদপুর উজানী আজিজিয়া দাখিল মাদ্রাসার ৫ শ্রেণির ছাত্র। সে এবারই প্রথম নয়, এর আগেও বেশ কয়েকবার কাউকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে গেছে। আবার ফিরেও এসেছে। এবারের ঘটনায় আমরা সবাই বিস্মিত হয়েছি। তাকে নিয়ে কীভাবে কী করব এখন  বুঝতেও পারছি না। 

জুনাইদ ইতিমধ্যেই গণমাধ্যমে জানিয়েছে, শখের বশেই সে বিমানে উঠেছিল। এরও এক সপ্তাহ আগে সে মাদ্রাসায় যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে পালায়। কয়েক দিন এখানে-সেখানে কাটিয়ে মঙ্গলবার ভোর রাতে ঢাকায় সায়েদাবাদ বাসষ্ট্যান্ডে গিয়ে নামে। সেখান থেকে বাসে হযরত শাহজালাল বিমান-বন্দরের সামনে নামে। হঠাৎই তার শখ জাগে বিমানে চড়ার। শখের বশবর্তী হয়েই সে খানিকটা কৌশল অবলম্বন করে নিরাপত্তা বেষ্টনি ভেদ করে উঠে বসে বিমানে।

জুনাইদের বিষয় নিয়ে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বৃহষ্পতিবার দুপুরের পর থেকে জুনাইদের গ্রামের বাড়িতে বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন আসছেন তাকে দেখতে। তাদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে জুনাইদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন, জুনাইদ সহ তার পরিবারের লোকজনদেরকে বিমানে চড়িয়ে ঘুরানোর জন্য। 

কেউ যশোর থেকে ঢাকায়, কেউবা ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়া-আসা, তিনদিন থাকা-খাওয়াসহ ঘোরাফেরা ইত্যাদি নানা অফার নিয়ে তারা ভিড় করছেন জুনাইদের গ্রামের বাড়িতে। 

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জুনাইদের চাচা ইউসুফ মোল্লা জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন বিভিন্ন অফার নিয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এ বিষয়টি নিয়েও তারা এখন দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন। 

 

এসআর

×