
সড়ক, ছবি: জনকণ্ঠ
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার বোয়ালমারী-ময়েনদিয়া সড়কটির বেহাল দশা। অসংখ্য ছোট-বড় খানা-খন্দে ভরা। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে সড়কটি যেন মরন ফাঁদে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে বোয়ালমারী থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা যাওয়ার সংক্ষিপ্ত এই রাস্তাটি মানুষের চলাচলের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, সড়কটির পাশেই কলারন গ্রামে রয়েছে গোল্ডেন জুট মিল। সে মিলে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ টি ট্রাক পাট বোঝাই করে আসা যাওয়া করে। তাছাড়া ময়েনদিয়া বাজারে রয়েছে পাটের মোকাম, সেখানেও প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ ট্রাক পাট নিয়ে আসা যাওয়া করে। বোয়ালমারী থেকে ময়েনদিয়া পর্যন্ত রাস্তাটি ৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা ইতিমধ্যে সংস্কার হয়েছে বাকি সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়ক বর্তমানে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
আরও পরুন:ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস
সরেজমিনে দেখা যায়, বোয়ালমারী-ময়েনদিয়া সড়কজুড়ে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত শত শত মানুষ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।প্রায়ই ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনা। বিগত কয়েক বছর ধরে সংস্কার করা হয়নি সড়কটি। ফলে সড়কটিতে অসংখ্য খানা-খন্দসহ প্রায় স্থানেই বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এমন ভাঙ্গাচোরা সড়ক দিয়ে চলতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজারো মানুষের। প্রায়ই-প্রতিনিয়ত পথিমধ্যে বিকল হয়ে যায় যানবাহন।
ট্রাক চালক ছগির হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ সড়টির বেহাল অবস্থা। অনেকটা মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে এ সড়ক দিয়ে চলতে হচ্ছে। এর মধ্যেই আজকে ট্রাকটি নিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে হলো। সড়কটি যেন মরন ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা সজীব হোসেন বলেন, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শত শত শিক্ষার্থী বোয়ালমারী ও ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করেন। এ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী নগরকান্দা, সালথা, মুকসেদপুর, ভাঙ্গা উপজেলার মানুষও এ সড়ক দিয়ে চলাচল করেন। কিন্তু চলার মতো কোনো অবস্থা নেই।
কলারন গ্রামের বৈদ্যনাথ ঠাকুর বলেন, এ পথে চলাচলে বর্তমানে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে হাজারো মানুষের। রাস্তাটি সংস্কার করে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাই।
এ ব্যপারে বোয়ালমারী শাহ্ জাফর টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস কলেজের অধ্যক্ষ লিয়াকত হোসেন লিটন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির বেহাল দশা। যানবাহন তো দুরে থাক পায়ে হেঁটে চলাও দায়। এ সড়ক দিয়ে যানবাহনের চালকরাও সহজে যেতে চান না। সুযোগ বুঝে ভ্যান, ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা,নছিমন ও মোটরসাইকেল চালকরা এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন দুই থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়া। বৃষ্টি হলে তো কথায় নেই। কাদা পানিতে পুরো সড়কজুড়ে যেন চাষযোগ্য জমিতে পরিনত হয়। বৃষ্টির পানিতে গর্তগুলো ভরে যায়,সৃষ্টি হয় কাদার। নানা দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে যানবহন চলছে এ সড়ক দিয়ে।
এ ব্যপারে সড়কটি সংস্কার কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সালেহ্ এন্ড ব্রাদার্সের সত্বাধিকারী সালেহ আহম্মেদ বলেন, এডিবির প্রকল্পভুক্ত আর,সি,আই বি প্রকল্পের মাধ্যমে ৭ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের কাজ টেন্ডারের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি। এর মধ্যে সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তার কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকি সাড়ে তিন কিলোমিটারের কাজ সিডিউল মোতাবেক সংশোধিত প্রাক্কলন করে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলীর মাধ্যমে ঢাকায় এলজিইডির প্রকল্প অফিসে প্রেরণ করা হয়েছে। সংশোধিত প্রাক্কলন অনুমোদিত হয়ে গেলেই সড়কের বাকি কাজটুকু সম্পন্ন করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী(স্থানীয় সরকার বিভাগ) পূর্নেন্দু সাহা বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। তারপরও বিষয়টি খোঁজ নিয়েছি। সাত কিলোমিটার সড়কটির সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বাকি সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা টেকসই ও মজবুত করার লক্ষে সংশোধিত প্রাক্কলন নির্বাহী প্রকৌশলীর মাধ্যমে ঢাকায় এলজিইডির এডিবি প্রকল্প অফিসে পাঠানো হয়েছে। সংশোধিত প্রাক্কলন অনুমোদিত হলেই রাস্তার বাকি কাজ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শুরু করবেন।
টিএস