ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কোরবানির বাজার  ধরতে ব্যস্ত  খামারিরা

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝিনাইদহ

প্রকাশিত: ২১:০১, ৯ জুন ২০২৩

কোরবানির বাজার  ধরতে ব্যস্ত  খামারিরা

গরু পরিচর্যায় ব্যস্ত খামারি

ঝিনাইদহ জেলার খামারিরা কোরবানির বাজার ধরতে এখন পশু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে। জেলার ছয় উপজেলায় দুই লাখ চার হাজার ৯’শ ২৮টি কোরবানির পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। চাহিদার চেয়ে প্রায় ৬০ হাজার বেশি কোরবানির পশু প্রস্তুত করছেন ঝিনাইদহের খামারিরা। কোরবানির বাজার ধরতে তাইতো মোটাতাজাকরণে এখন ব্যস্ত তারা। গো-খাদ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে এবার খরচও বেশি। সীমান্তবর্তী এই জেলায় ভারতীয় গরুর আমদানি ঠেকানো না গেলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন খামারিরা।
ঝিনাইদহ শহরের চাকলাপাড়া এলাকার খামারি জিনারুল ইসলাম তরুণ জানান, গত তিন বছর ধরে লালন-পালন করছেন ব্রাহামা জাতের দুটি গরু। একেকটি গরুর ওজন ২৫ থেকে ২৭ মণ হবে। যার দাম হাঁকা হচ্ছে ২০ লাখ টাকা করে। এরই মধ্যে একেকটি গরুর মূল্য উঠেছে ১৪ থেকে ১৫ লাখ টাকা। আর ১৮ দিন পরেই ঈদুল আজহা। তাই একটু বেশিই যত্ন-আত্তি চলছে তাদের পালনকৃত রাজা ও বাদশা নামের গরু দুটির। জেলা শহরের খামারি জিনারুল ইসলাম তরুণের মতো জেলার ছয় উপজেলায় কোরবানির পশু পালনে এখন ব্যস্ত সময় পার করছে খামারিরা। আগামী সপ্তাহে পুরোদমে শুরু হবে কোরবানির পশু কেনা-বেচা। তাইতো বাজার ধরতে গরুর বিভিন্ন ধরনের যত্নে ব্যস্ত তারা। প্রাকৃতিক ও স্বাভাবিক খাবার ব্যবহার করে পশু মোটাতাজা করছেন তারা। 
খামারিরা জানান, এ বছর পশুখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরু পালনে খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ। এ ছাড়াও এ বছর ভাবাচ্ছে প্রচন্ড দাবদাহ। কারণ এভাবে দাবদাহ চলতে থাকলে বড় বড় গরু স্ট্রোক করতে পারে। তবে ঈদের আগে যদি দাবদাহ স্বাভাবিক হয় তাহলে কিছুটা হলেও আমাদের মাঝে স্বস্তি ফিরবে। এবং বেশি দামে আমাদের পালনকৃত গরু বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি। তাই ঈদের আগে দেশের বাজারে ভারতীয় গরু প্রবেশে কঠোর নজরদারির দাবি জানান তারা। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মনোজিৎ কুমার সরকার জানান, স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে পশু লালন-পালন ও বাজারজাত করণের বিষয়ে জেলার সকল খামারিকে নানা ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, এ বছর জেলার ছয় উপজেলায় দুই লাখ চার হাজার ৯’শ ২৮টি কোরবানির পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এ জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৬০ হাজার পশু পাঠানো হবে ঢাকার গাবতলী, মাদারীপুর, টেকেরহাট, বরিশাল, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার পশুর হাটে। 
কোরবানির হাট মাতাতে আসছে ডন

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফরিদপুর থেকে জানান, এবার কোরবানি ঈদে হাট মাতাতে আসছে ফরিদপুরের সালথার ডন। ডন  কোনো মানুষের নাম নয় এটা একটি গরুর নাম। কোরবানির ঈদ এলেই দেখা মেলে বাহারি নাম ও বিশাল আকৃতির গরুর। এবারও এর ব্যত্যয় ঘটেনি।   এবছরও ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ১৬০০ কেজি ওজনের ডন নামের একটি গরু ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানুষের মন কেড়েছে। 
ফরিদপুরের সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের হরেরকান্দি গ্রামের রুবায়েত হোসেন  দুই বছর আগে ফ্রিজিয়ান জাতের এ গরুটি ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে কিনে আনেন। আনার পরই আদর করে গরুটির নাম দেন ডন। তিনি গরুটিকে একটি ঘরের মধ্যে রেখেই লালন-পালন করেছেন। দুই বছরের মধ্যে এক দিনের জন্যও গরুটিকে ঘরের বাইরে আনেননি। দুই বছর ধরে একটি ঘরের মধ্যেই ডনকে কোরবানির হাটে তোলার জন্য প্রস্তুত করা হয়। এক সপ্তাহ আগে ঘর ভেঙে ডনকে বাইরে আনা হয়। ডন এখন ডনের মতোই দেখতে হয়েছে।  ডনকে দেখতে হাজারো মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন রুবায়েতের বাড়িতে। তাদের অনেকেরই দাবি, ফরিদপুর জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় গরু এটি। এ বছর কোরবানির হাটের বড় গরুর প্রতিযোগিতায় নাম লেখাতে চায় ফরিদপুরের ‘ডন’ নামের এ গরুটি।  
জানা গেছে, ফরিদপুর জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় গরু হচ্ছে ‘ডন’। উচ্চতা ৬ ফুট ৪ ইঞ্চি এবং লম্বায় ১২ ফিটের বেশি। প্রায় ১৬০০ কেজি ওজনের এ গরুটি দেখতে ভিড় করছেন মানুষ। তাদের মাঝে গরুটির দাম নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।  ডন নামক গরুটির মালিক রুবায়েত হোসেন বলেন, সম্পূর্ণ দেশীয় খাবার দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ফরিদপুরের ডন নামক গরুটিকে। আমি নিজে ঘাস চাষ করে গরুকে খাওয়াইছি। পাশাপাশি ছোলা, ভুসি এমনকি প্রতিদিন কমলা, মাল্টা, আঙ্গুর ও কলা খাওয়ানো হচ্ছে ডনকে। কোরবানি আসার আগেই অনলাইনের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত দরদাম করছেন ক্রেতারা। ২৫ লাখ টাকা হলে বিক্রি করা হবে। তবে আমার ইচ্ছা কেরবানির হাটে নিয়ে ডনকে বিক্রি করা। সালথা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাহিদুল ইসলাম বলেন, ষাঁড়টিকে লালন পালনে সফল ব্যক্তি রুবায়েতকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। আশা করি, ষাঁড়টির ন্যায্যমূল্য পেলে বিক্রি করে লাভবান হবেন।
কালো পাহাড়

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাগুরা থেকে জানান, মাগুরার শ্রীপুরে মনিরুল ইসলাম নামে এক খামারির খামারে কোরবানির উপযোগী কালো পাহাড় নামে একটি  বিশাল ষাঁড় লালনপালন করা হয়েছে। যার ওজন ৩০মণ। ষাঁড়টির উচ্চতা  ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি ও লম্বা ৮ফুট । মনিরুল ইসলাম জানান, ষাঁড়টি কোরবানির পশুরহাটে বিক্রি করা হবে।  ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টি তিনি ৪ বছর ধরে  নিরলস পরিশ্রম ও পরিচর্যার মাধ্যমে  বড় করেছেন। কোরবানির উপযোগী ষাঁড়টির নাম দিয়েছেন কালো পাহাড়। ওজন ৩০ মণ। প্রতিদিন তার বাড়িতে ষাঁড়টি দেখতে অনেকে ভিড় করছেন। মনিরুল ইসলাম অন্য  সদস্যরা নিয়মিতভাবে এখানে শ্রম দেন।
 

×